নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির দৃশ্য চোখে পড়েছে। ৭ জুন শনিবার ঈদের প্রথম দিন ব্যস্ততা ও চাপ সামলাতে না পেরে কিংবা কসাই সংকটের কারণে যারা কোরবানি করতে পারেননি, ৮ জুন রোববার দ্বিতীয় দিনে তারা পশু কোরবানি করছেন। বিশেষ করে পুরান ঢাকা, লালবাগ, টিকাটুলী, মুগদা এবং বাসাবো এলাকায় সকাল থেকেই কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের ব্যস্ত দৃশ্য চোখে পড়েছে।
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি বাসার সামনে পলিথিন টানিয়ে পশু কোরবানির প্রস্তুতি চলছে। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে পশু কোরবানি সম্পন্ন করেছেন। তার কিছু দূরেই রাস্তার পাশে কয়েকজন তরুণ মাংস কাটছেন, পাশে দাঁড়িয়ে কসাই নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিছু দূরে শিশু-কিশোররা দাঁড়িয়ে কোরবানির দৃশ্য দেখছে। লালবাগের বউবাজার, টিকাটুলীর জনবহুল গলি, মুগদা ও বাসাবোর অভ্যন্তরীণ বেশকিছু সড়কেও একই চিত্র দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল ঈদের দিন কসাই সংকট এবং সময় ও প্রস্তুতির অভাবে কোরবানি করতে না পেরে অনেকেই আজ করছেন। কারও কারও গরু হাট থেকে বাড়ি পৌঁছেছে ঈদের দিন রাতে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছে করেই ভিড় এড়িয়ে আজ কোরবানি করছেন, যাতে সময় নিয়ে কাজ করতে পারেন।
পুরান ঢাকার লালবাগের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কসাই ঈদের দিন তিন জায়গায় কাজ নিয়ে ফেলেছিল। শেষ পর্যন্ত আমাদের সময় হয়নি। তাই আজ সকালে নিজেরাই জবাইয়ের ব্যবস্থা করেছি।
স্থানীয় যুবক মিল্লাত হোসেন বলেন, আমাদের কোরবানি কালকেই করেছি। কিন্তু আজ এক প্রতিবেশীর কোরবানিতে সহায়তা করছি। অনেকেই সময়ের অভাবে একদিনে শেষ করতে পারেননি।
মুগদার গৃহবধূ রোজিনা আক্তার জানান, আমাদের পরিবারে সব আত্মীয়-স্বজন মিলে কোরবানি দিয়ে থাকি। গতকাল সারাদিন নানা জায়গায় সবাই ব্যস্ত ছিলাম। তাই আজ সকালে সবাই মিলে একসঙ্গে কোরবানি দিয়েছি।
অন্যদিকে, আজও পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সিটি করপোরেশনের তৎপরতা দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, কোরবানির দ্বিতীয় দিনেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় আজ কোরবানি হচ্ছে, সেখানে আমরা নির্ধারিত পয়েন্টে কর্মী পাঠিয়ে বর্জ্য অপসারণ করছি। ঈদের তিন দিনই আমরা মাঠে থাকব।
টিকাটুলী এলাকায় কাজ করা ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী সবুজ আলম বলেন, কাল অনেক জায়গা পরিষ্কার করেছি, আজও সকাল থেকেই ব্যাগ-বালতি নিয়ে কাজে নেমেছি। অনেক বাসা থেকে নিজ উদ্যোগেও ময়লা নির্ধারিত পয়েন্টে আনা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ধর্মীয় দিক থেকে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১১ জিলহজও কোরবানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের বর্ণনায় এ দিনটি মর্যাদাপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো কোরবানির দিন, এরপরের দিনটি। তাই অনেকেই আজও কোরবানি করছেন। শরিয়ত অনুযায়ী ১০ থেকে ১২ জিলহজ, মোট তিন দিন কোরবানি করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যে কোনো দিন কোরবানি দেওয়া বৈধ, তবে প্রথম দিন কোরবানি করা সবচেয়ে উত্তম। সময়মতো কোরবানি না হলে তার পরিবর্তে সদকা করারও নির্দেশ রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available