রাঙামাটি প্রতিনিধি: পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ কাজ থেকে কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে বারবার হামলা চালিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল।
অবশেষে ১১ মে রোববার সকালে রাঙামাটি রাবিপ্রবি’র ক্যাম্পাসের ভেতরে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র দল প্রবেশ করে চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্তৃপক্ষ।
এর আগেও আরেকটি গ্রুপ সশস্ত্র অবস্থায় এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো। পরবর্তীতে জেএসএস নামক সেই গ্রুপটির সাথে সংশ্লিষ্টরা আলোচনার মাধ্যমে সোয়া কোটি টাকা চাঁদা দিয়ে কাজ শুরু করে। এই ঘটনার দুই মাস না যেতেই রোববার ১১ মে আবারও অস্ত্রধারীরা চাঁদার দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেয়।
জানা যায়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন (২য় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় তিন তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে এমই-আরবি নামক জয়েন্টভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। একাডেমিক ও প্রশাসনিক এই দুটি ভবন নির্মাণ ব্যয় আনুমানিক প্রায় ২৫ কোটি টাকা।
রোববার সকাল সাড়ে ৭টার সময় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী রাবিপ্রবি’র মূল ফটকে এসে একজনকে ভেতরে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলে। এসময় ঠিকাদারকে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলে অন্যথায় সশস্ত্র হামলা চালানোর হুমকি দেওয়া হয়। এতে সকলেই ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে কাজ বন্ধ রাখেন। উক্ত কাজের নিরাপত্তা প্রহরী জেফলিন চাকমা প্রতিবেদককে মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এই ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম থেকে উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার রাকিব রোববার দুপুরে রাঙামাটির রাবিপ্রবিতে এসে উক্ত উপজাতীয় গ্রুপদের সাথে আলোচনায় মিলিত হয়ে বিকেল থেকে আবারও কাজ শুরু করেছেন বলে প্রতিবেদককে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে ঠিকাদার রাকিব হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, একটি স্বাধীন সার্বভৌমদেশে সরকারকে প্রয়োজনীয় ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে যথাযত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রাবিপ্রবিতে ভবন নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করছি আমরা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় শহরের অদূরে পৌরসভার ভেতরেই অনেকটা প্রকাশ্যে আমাদের থেকে চাঁদা আদায় করছে।
পাহাড়ের সর্বোচ্চ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে প্রকাশ্যদিবালোকে এই ধরনের ঘটনায় বিস্মিত হলেও নিজেদের জীবন-জীবিকার তাগিদে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তাদের শ্রমিক-ইঞ্জিনিয়ারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নিজস্ব সোর্স স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেই রয়েছে। সেখানে চাকরিরতদের মধ্যেই সন্ত্রাসীদের আত্মীয়-স্বজনও রয়েছে। তাদের মাধ্যমেই সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের সকল তথ্য অনায়াসেই পেয়ে যায়। ফলে সুনির্দিষ্ট তথ্যানুসারেই সময়-সুযোগ বুঝেই রাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল গফুর জানিয়েছেন, উপাচার্যসহ আমরা ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়গুলো নিয়ে রাঙামাটির সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available