• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৪ই চৈত্র ১৪৩০ রাত ১২:০২:২২ (29-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৪ই চৈত্র ১৪৩০ রাত ১২:০২:২২ (29-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:

ফরিদপুরে ৩০০ কোটি টাকার ‘কালো সোনা’ উৎপাদনের আশা

স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর: ফরিদপুরে চলতি মৌসুমে কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এবার পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজের আমদানি ঠেকানো না গেলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরা।খবর নিয়ে জানা গেছে, পেঁয়াজের সাদা কদম শুকিয়ে বের হয় কালো বীজ, যার বাজার দর আকাশছোঁয়া। তাই এ বীজকে বলা হয় কালো সোনা। দিনে দিনে এই কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের আবাদ বাড়ছে। বর্তমানে সারাদেশে পেঁয়াজ বীজের চাহিদা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ যোগান দেন ফরিদপুরের চাষিরা। এবার জেলার চাষিদের পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বাজার ছাড়িয়ে যাবে।ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ফরিদপুরের ৯টি উপজেলায় ১৮৯০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে এবার কমপক্ষে পৌনে ৮ মেট্রিক টনের মতো পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকার অধিক বলে আশা করা হচ্ছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ফরিদপুরের ৯টি উপজেলায় পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে জেলা সদরে প্রায় ২০৮ হেক্টর জমিতে। এরপর ভাঙ্গায় ১৭৬, সদরপুরে ১৪৬, চরভদ্রাসনে ৬৮, মধুখালীতে ৬৮, বোয়ালমারীতে ৩৪, নগরকান্দায় ২৮, সালথায় ২২ ও আলফাডাঙ্গায় ৬ হেক্টর জমিতে এবার পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে।গত মৌসুমে ফরিদপুরে ১৮৬৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছিল। গতবারের তুলনায় এ বছর আবাদের পরিমাণ বেড়েছে। লাভের মুখ দেখায় এই ফসলের দিকে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার পেঁয়াজ বীজ চাষি লাভলি আক্তার ও ইমতাজ মোল্লা দম্পতি গত প্রায় একযুগ ধরে পেঁয়াজ বীজ চাষ করছেন। দুই বিঘা দিয়ে শুরু করে এখন তাদের জমির পরিমাণ ৪০ বিঘা।লাভলি আক্তার জানান, বিয়ের পর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের পেঁয়াজ বীজের চাষ করা দেখে স্বামীকে সহায়তায় নামেন। সেই থেকে শুরু, এতে প্রথম বছরেই ভালো আয় হওয়ায় বড় পরিসরে আবাদ শুরু করে সফল তিনি।সরেজমিনে গেলে পেঁয়াজ বীজ চাষিরা জানান, পেঁয়াজ বীজ আবাদে যত্নশীল থাকতে হয়। কোনো রকম অযত্ন হলে ফলন নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষেতে বীজের আবাদ শুরু হয় নভেম্বর-ডিসেম্বরে আর ফলন পাওয়া যায় এপ্রিল-মে মাসের দিকে। ক্ষেত থেকে তোলার পর একবছর এই বীজ সংরক্ষণ করতে হয়।একটা সময় পুরোপুরি আমদানি নির্ভর থাকলেও দিনে দিনে দেশে এই কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের আবাদ বাড়ছে। দেশের পেঁয়াজ বীজের মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ উৎপাদন হয় ফরিদপুরে।চলতি মৌসুমে ফরিদপুরের বড় পেঁয়াজ বীজ চাষি বকতার খান জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজ আমদানি করা হলে তা সার্বিকভাবেই ক্ষতি ডেকে আনবে। কারণ, ভারত থেকে আনা পেঁয়াজ বীজ নিম্নমানের। তাতে ভালো ফলন হয় না।ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ফরিদপুরের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ বীজের আবাদের জন্য বেশ উপযোগী। যার কারণে এখানে বীজের ব্যাপক আবাদ হয়। নয়টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় এর আবাদ বেশি। এছাড়াও ফরিদপুরে ৩ ধরনের পেঁয়াজ আবাদ হয়।ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার জেলার চাষিরা কমপক্ষে পৌনে ৮ মেট্রিক পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করবেন। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকার অধিক।তিনি আরও জানান, ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজ চাষিদের সমস্যা নিরসনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর তাদের সকল ধরনের পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহায়তা করে আসছে। চাষিরা দিনে দিনে এ বীজ আবাদ করে উন্নতি করছেন।