লালমনিরহাট প্রতিনিধি: কাউন, গম, তিল, বাদাম ও বোরো ধান চাষের চেয়ে ভুট্টায় কম খরচে লাভ বেশি হওয়ার কারণে লালমনিরহাটে বেড়েছে ভুট্টার চাষ। চরাঞ্চলের পতিত জমি ও বালুচরগুলোতে আবাদ করা হচ্ছে ভুট্টার। এতে বেশি লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেলায় ভুট্টা চাষ হয়েছিল ২৩-২৪ রবি মৌসুমে ৩২ হাজার নয় শত ১০ হেক্টর জমিতে। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর জেলায় ভুট্টা চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৫ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার গত রবি মৌসুমের চেয়ে ১৪৫ হেক্টর বেশি।
এবার আশা করা যাচ্ছে, ৭৮হাজার ৪৬৫ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হবে যা সম্ভব্য গত বছরের চেয়ে ১৮১০০ মেট্রিক টন বেশি। এখন পর্যন্ত উৎপাদিত ভুট্টার ৩০% ঘরে তুলতে পেরেছে কৃষকরা। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকরা অবশ্যই লাভবান হবেন। লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলা সহ পাঁচটি উপজেলাতেই ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে চোখে পড়ার মতো।
সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী ফুলগাছ ও কুলারঘাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভুট্টা চাষাবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
চর ফলিমার এলাকর ভুট্টা চাষি মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর নিজের জমিসহ অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টা চাষ করে দাম ভালো পেয়েছি। এবার ভুট্টার চাষ আরও বাড়িয়ে দিয়েছি, আশা করছি গত বছরের তুলনায় ফলন ও দাম উভয়েই ভালো পাবো।
আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চর কুঠিবাড়ির একজন কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভুট্টা চাষাবাদে ভালো লাভ পাওয়া যায় তামাক ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে এতে পরিশ্রম কম হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘ভুট্টা চাষাবাদে বিঘাপ্রতি ৮ থেকে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা খরচ হয়, গত বছর বিঘাপ্রতি (৩৩ শতকে) ২৫-৩০ মণ ভুট্টা পেয়েছি। বাজারে বিক্রি করে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি ১২-১৩ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এ বছর সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় ভুট্টার দাম বাড়লে মোটামুটি লাভবান হওয়া যাবে।
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার ভুট্টা চাষী রশিদুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য যে কোন ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে লাভবান হওয়া যায়, তামাকের চেয়েও এর চাষাবাদ পদ্ধতি সহজ এবং স্বাস্থ্যসম্মত। এবার তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি ফলনও বাম্পার হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে ভুট্টা চাষে আমি লাভের মুখ দেখবো।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সইখুল আরিফিন বলেন, এ বছর চরাঞ্চলগুলোয় ভুট্টার চাষ বেড়েছে। আমরা ৬ হাজার দুইশত কৃষকের মাঝে সার, বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়েছি। আশা রাখছি এ বছর কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হবেন। আগামীতে জেলায় ভুট্টা চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আশা রাখছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available