সিনিয়র রিপোর্টার: সম্প্রতি ‘স্বানাপ সিন্ডিকেটে বন্দি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট’ শিরোনামে একটি সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে। ৮ জন নার্সের নাম উল্লেখ করে একাধিক পত্রিকায় হুবহু সংবাদটি প্রকাশিত হয়।
এ সংবাদের সতত্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাসপাতালটির পরিচালক ও অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত নার্সরাই রোগীদের মানসম্মত সেবা দিয়ে থাকেন। হৃদরোগ চিকিৎসায় দেশের একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালটিতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে নার্সদের নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা এসব করছে।
প্রচারিত খবরের সত্যতা প্রসঙ্গে ৩১ মে শনিবার রাজধানীর শের-এ-বাংলানগরে অবস্থিত পরিচালকের নিজ কার্যালয়ে এশিয়ান টিভিকে অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী আরও বলেন, নার্সদের কোনো সিন্ডিকেট আমার এখানে নেই। এটা সংবাদ নয় নোংরামি, যারা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন তাদের মর্যাদা বাড়াতে মন্তব্য করতে চাই না।
গত বছরের ৩ আগস্ট ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের একটি ব্যানারে শান্তি সমাবেশ করার নির্দেশনা থাকায় হাসপাতালটির সেই সময়ের কর্মকর্তারা শান্তি সমাবেশে যেতে বাধ্য করেছিলেন নার্সদের। সমাবেশে অংশ নেয়া কয়েকজন নার্স এশিয়ান টিভিকে বলেন, দলীয় বা রাজনৈতিকভাবে নয়, শুধুমাত্র সরকারি নির্দেশনা মানতেই ৫০ থেকে ৬০জন নার্স গিয়েছিল সমাবেশে। এখন পর্দার আড়ালে থাকা বর্ণচোরা কুচক্রী মহল নিরীহ নার্সদের ওই সমাবেশের ছবি দেখিয়ে নানাভাবে হয়রানি করছে। ওই ছবির পোস্টার হাসপাতালের অভ্যন্তরে দেয়ালে লাগিয়ে, বিভিন্ন পত্রিকায় দিয়ে এবং বদলির ভয় দেখিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন ভুক্তভোগী নার্সরা।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) জাহানারা আক্তার বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে নার্সদের কোনো সংগঠন বা রাজনীতি নেই, পরিচালক স্যারের নির্দেশে সবাই কাজ করছি।
সম্প্রতি ওয়ার্ড ইনচার্জ পরিবর্তন নিয়ে সেবা তত্ত্বাবধায়ক বলেন, গত ২২ মে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ২ বছর পূর্ণ হয়েছিল এমন ৭ জন ওয়ার্ড ইনচার্জ পরিবর্তন করে কর্তৃপক্ষ এবং জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে ও যোগ্য ৭ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সকে একই নিয়মে চার্জ দেয়া হয়। ওয়ার্ড ইনচার্জদের মধ্যে সিনিয়র স্টাফ নার্স ঝর্ণা বেগম সরকারীভাবে সৌদি আরবে পবিত্র হজ ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করছেন। ঝর্ণা বেগম ৫ বছরের অধিক সময় ওয়ার্ড ইনচার্জ থাকায় নার্সিং অধিদপ্তরের নিদের্শনা অনুসারে তাকেও চার্জ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
একজন নার্স জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একবার হজে যাওয়ার নিয়ম। ঝর্ণা বেগম ২০২২ সালে একবার গিয়েছেন, দ্বিতীয়বার হজে কীভাবে গেলেন, এমন প্রশ্নে সেবা তত্ত্বাবধায়ক বলেন, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ঝর্ণা বেগমের কোনো আবেদন ফরওয়ার্ড করেনি বা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, আমরা এমনটাই শুনেছি।
এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মুনীর আহমদ খান বলেন, সরকারি নিয়মে নার্সদের ওয়ার্ড ইনচার্জ পরিবর্তন করা হয়েছে। কারো ব্যক্তিগত স্বার্থ ক্ষুণ্ন হলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করতে পারে, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নার্সদের রাজনীতির নামে কোনো সিন্ডিকেট নেই।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available