• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ০৯:১৭:৫৬ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ০৯:১৭:৫৬ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

কালিয়াকৈরে দেড়শ বছরের ঐতিহ্য ‘ধনীর চিড়া’ ৪০০ টাকা

২৬ আগস্ট ২০২৩ বিকাল ০৪:৫৪:২৫

কালিয়াকৈরে দেড়শ বছরের ঐতিহ্য ‘ধনীর চিড়া’ ৪০০ টাকা

মোরশেদ আলম, গাজীপুর: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় ধনীর চিড়ার প্রতি কেজি বিক্রি করা হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি। কখনও কখনও ৫০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করতে দেখা গেছে এই বিখ্যাত চিড়া। ঐতিহ্যবাহী এই ‘ধনীর চিড়া’ খ্যাতি বাংলাদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়েছে সুদূর ইংল্যান্ডসহ সারা বিশ্বে। যার স্বাদ আর সুগন্ধে জয় করেছিল ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়ার মন।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়নের বারবাড়ীয়া গ্রামের শ্রী দুর্লভ সরকারের সহধর্মিণী শ্রীমতি ধনী রানি সরকার এ চিড়ার উদ্ভাবক। পরে তার নামানুসারেই বাংলার সেই বিখ্যাত চিড়ার নাম হয় ‘ধনীর চিড়া’।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৮৫০ সালের দিকে এক অভাবগ্রস্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ধনী রানি সরকার। বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় ধনী রানি সরকারের স্বামী দুর্লভ সরকার মারা যান। রেখে যান দু’টি সন্তান। এ অবস্থায় চরম হতাশায় পড়েন ধনী রানি। উপায়ান্তর না দেখে তিনি সাহায্যের জন্য চলে গিয়েছিলেন বলিয়াদী জমিদার বাড়িতে। তখন জমিদার সাহেব সাহায্য স্বরূপ কিছু ধান দিয়েছিলেন তাকে। তিনি চিন্তা করলেন, ধান থেকে ভাত রান্না করে খেলে কিছুদিনের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে। তাই দীর্ঘদিন খাওয়ার আশায় ঢেঁকিতে চিড়া কুটেন ধনী রানি। ঢেঁকিতে চিড়া কুটে রীতিমতো বিস্মিত হন ধনী রানি-এই ধানে এত সুস্বাদু চিড়া হয়। সব ধানের চিড়া না কুটে কিছু ধান বীজ হিসাবে বপন করেন এবং প্রতিবেশীদেরও কিছু ধানের বীজ দেন। এভাবেই পুরো এলাকায় বিস্তার লাভ করে এ ধানের জাত।

কালিয়াকৈর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পলাশ মিষ্টান্ন ভান্ডারসহ কয়েকটি দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে ধনীর চিড়া। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও রয়েছে বেশ। বাজারে প্রকার ভেদে সাধারণ চিড়া যেখানে বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সেখানে ধনীর চিড়া বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ টাকা। তারপরও ক্রেতাদের ভীড় লেগেই থাকে।  

পলাশ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক গবিন্দ ঘোষ বলেন, বাজারে সাধারণ চিড়ার মূল্য ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সেখানে ধনীর চিড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি। তারপরও এর ব্যাপক চাহিদা। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ চিড়া নিয়ে যাচ্ছেন। অল্প কয়েকটি পরিবার এই চিড়া তৈরি করায় ব্যাপক চাহিদা থাকলেও তারা চাহিদা মতো দিতে পারেন না।

ধনীর চিড়া সম্পর্কে জানতে দোকানে খেতে আসা মেসার্স সাদিয়া অটো মোবাইলস্-এর মালিক বাবুল হোসেন বলেন, এই চিড়া আমাদের কালিয়াকৈরের ঐতিহ্য। চিড়া খেতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসে। আমি কালিয়াকৈরের একজন ব্যবসায়ী। আমার এখানে বিভিন্ন লোকজন আসে। তাদেরকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসি এই বিখ্যাত চিড়া খাওয়ার জন্য।

গাজীপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বই থেকে জানা যায়, ১৮৮৬ সালের দিকে রানি ভিক্টোরিয়ার জন্মদিনে তৎকালীন ঢাকার গভর্নর উপঢৌকন হিসাবে কয়েক মন ধনীর চিড়া পাঠান। সেই জয়োউৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় অতিথিরা এ চিড়ার গুণগত মান ও স্বাদের প্রশংসা করেন। পরে রানি ভিক্টোরিয়া চিড়া প্রস্তুতকারীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু ধনী রানি ভয়ে যাননি। কেননা, ঢাকার মসলিন কাপড় যখন বিখ্যাত হয়েছিল, তখন ইংরেজরা কারিগরদের আঙুল কেটে দিয়েছিল, যাতে তারা আর মসলিন কাপড় না বানাতে পারে।

দ্বিতীয়বার রানি ভিক্টোরিয়া আবার আমন্ত্রণ জানালে ধনী রানি শর্ত দিয়ে বলেন, যদি তাকে বিনা পয়সায় গয়াকাশি ও বৃন্দাবন যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়, তবে তিনি রানি ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন। তার প্রস্তাব গ্রহণ করেন রানি ভিক্টোরিয়া এবং ১৮৮৭ সালে ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি হিসাবে ধনী রানি গয়াকাশি ও বৃন্দাবনসহ ভারত সফর করেন।

ধনীর চিড়া প্রস্তুতকারী যতীন্দ্র সরকার জানান, নয়া শাইল ধান দিয়ে এ চিড়া তৈরি করা হয়। সেই ধান এখন খুব একটা পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যাচ্ছে তার দামও অনেক বেশি। যার কারণে চাহিদা থাকলে সেই পরিমাণ মতো তৈরি করা সম্ভব হয় না। 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ








রাবিতে রাতভর সংঘর্ষ
১২ মে ২০২৪ সকাল ০৭:৫৭:৫৯