• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০৮:৩৮:২১ (11-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০৮:৩৮:২১ (11-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জাতীয়

আজ ২১ আগস্ট: ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী

২১ আগস্ট ২০২৩ সকাল ০৭:২৮:২৩

আজ ২১ আগস্ট: ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ রক্তাক্ত বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ আগস্ট একটি নৃশংসতম ভয়াল দিন। এদিন নারকীয় সন্ত্রাসী হামলার ১৯তম বার্ষিকী।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নজির বিহীন গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হিংসার দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। আক্রান্ত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় আয়োজিত সমাবেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই ঘটনায় দলীয় নেতাকর্মীরা মানববর্ম রচনা করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করলেও গ্রেনেডের আঘাতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। পরবর্তী সময়ে গ্রেনেড হামলার বিচারের রায়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি জোট সরকারের মন্ত্রী ও সরকারের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলে যে, ওই সরকারের প্রত্যক্ষ মদতেই হামলাটি পরিচালিত হয়েছিল।

আজ ইতিহাসের এই জঘন্যতম গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকীতে বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাবনতচিত্তে হামলায় নিহতদের স্মরণ করছে। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করছে।

তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। সেদিন ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি বিরোধী’ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশের আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রাকমঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে একের পর এক গ্রেনেড। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই মানুষের রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পরিণত হয় এক মৃত্যুপুরীতে। স্পিন্টারের আঘাতে মানুষের হাত-পাসহ বিভিন্ন অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে। সভামঞ্চ ট্রাকের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় রক্তাক্ত নিথরদেহ। মরদেহ আর রক্তে ভেসে যায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সামনের পিচঢালা পথ। নিহত-আহতদের জুতা-স্যান্ডেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ভেসে আসে শত শত মানুষের গগন বিদারী আর্তচিৎকার। বেঁচে থাকার প্রাণপণ চেষ্টারত মুমূর্ষুদের কাতর-আর্তনাদসহ অবর্ণনীয় মর্মান্তিক সেই দৃশ্য।

ভাগ্যগুণে নারকীয় গ্রেনেড হামলায় অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। ঘাতকদের প্রধান লক্ষ্য শেখ হাসিনা বেঁচে গেছেন দেখে তার গাড়ি লক্ষ্য করে ১২ রাউন্ড গুলি করা হয়। তবে টার্গেট করা গুলি বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বহনকারী বুলেটপ্রুফ গাড়ি ভেদ করতে পারেনি। হামলার পরপরই শেখ হাসিনাকে কর্ডন করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর তৎকালীন বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনে। ২১ আগস্টের রক্তাক্ত ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। পরে সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ জনে। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান ছাড়াও সেদিন নিহত হন ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, হাসিনা মমতাজ রিনা, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম। গ্রেনেডের স্পিন্টারের সঙ্গে লড়াই করে ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফসহ আরও কয়েকজন পরাজিত হন।

হামলায় আওয়ামী লীগের চার শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়ে শরীরে স্পিন্টার নিয়ে আজও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আহত হয়েছিলেন বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা। এখনও অনেক নেতাকর্মী সেদিনের সেই গ্রেনেডের স্পিন্টারের মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। অনেক নেতাকর্মীকে তাৎক্ষণিক দেশে-বিদেশে চিকিৎসা করালেও তারা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি।

এদিকে গ্রেনেড হামলার পর ভয়, শঙ্কা ও ত্রাস গ্রাস করে ফেলে গোটা রাজধানীকে। এই গণহত্যার উত্তেজনা ও শোক আছড়ে পড়ে দেশ-বিদেশে। হামলার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিজে বাঁচতে ও অন্যদের বাঁচাতে যখন ব্যস্ত হয়ে পড়েন, ঠিক তখনই পুলিশ বিক্ষোভ মিছিলের ওপর বেধড়ক লাঠি-টিয়ারশেল চার্জ করে। একইসঙ্গে নষ্ট করা হয় সেই রোমহর্ষক ঘটনার যাবতীয় আলামত। পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রত্যক্ষ মদদে ওই ঘটনা ধামাচাপা দিতে ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।

কর্মসূচি: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হবে।

এছাড়াও সকাল সাড়ে ১১টা ১৫ মিনিটে ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ ও নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র: বাসস। 
 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ