গাজীপুরের (শ্রীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে শ্রমিক নিহতের ঘটনার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার পাঁচ শতাধিক শ্রমিকরা।
৩ জুন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্রমিক-পুলিশের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা ও পুলিশের সাঁজোয়াযানে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এতে পুলিশ-শ্রমিকসহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, সোমবার রাতে কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল থেকে নিহতের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তারা। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে শ্রমিকরা কারখানা ও পুলিশের একটি এপিসি গাড়িতে ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশের সাথে ধাওয়া- পাল্টা-ধাওয়া, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হন। কারখানার ভেতরে অবস্থান করছেন বিপুল সংখ্যক শ্রমিক।
কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, পুলিশ পূর্বপরিকল্পিতভাবে সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। টিয়ারশেলের আঘাতে তাদের অন্তত অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন।
অপরদিকে পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় এ হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশের ৯ জন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কারণে সেখানে কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে। তবে এতে শ্রমিক আহতের মতো ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে ২ জুন সোমবার রাত ৮টায় কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মো. জাকির হোসেন (৩০) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তিনি নেত্রকোণা জেলার বারহাট্রা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে। তিনি জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানায় চাকরি করতেন।
শ্রমিকদের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইতে গিয়েছিলেন জাকির। কিন্তু ছুটি না দিয়ে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণে তিনি অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। লাফিয়ে পড়ার পর তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের একজন রতন বলেন, দুর্ব্যবহারের কারণে তাদের এক সহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিকরা আন্দোলন করছিলেন। এ সময় অতর্কিতভাবে তাদের উপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
অপর শ্রমিক বলেন, আগে থেকেই কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। এ সব বিষয় সুরাহা না করে শ্রমিকদের উপর এভাবে হামলা করা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে কারখানার এজিএম জুবায়ের বাসার বলেন, নিহত ওই শ্রমিক ছুটি চাইতে যাননি। তিনি জানতে পেরেছেন পারিবারিক কলহের কারণে হতাশায় ভুগছিলেন ওই শ্রমিক। হতাশা থেকেই তিনি লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের গাজীপুরের শ্রীপুর সাব জোন পরিদর্শক মো. আব্দুল লতিফ বলেন, শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে তাদের আমরা ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available