গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: গভীর নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় ২৮ মে বুধবার রাত থেকে টানা মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। এরই মধ্যে জোয়ারের চাপে একাধিক স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি গ্রাম। ফলে গলাচিপা পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঘরে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি। অনেক পরিবারে চুলা পর্যন্ত জ্বলেনি, অনেক পরিবারের সদস্যরা না খেয়ে সময় পার করছেন। কুটিয়ালপাড়ার ব্যবসায়ীদের মজুতকৃত ধান, ডাল ও বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নিম্নাঞ্চল বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত।
নদী বেষ্টিত এই উপজেলার সাথে সারা দেশের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ফেরি। কিন্তু জোয়ারের পানিতে ফেরির জেটি তলিয়ে যাওয়ায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এদিকে পানপট্টি ইউনিয়নের ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পানপট্টি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ৫৫/৩ নম্বর পোল্ডারের প্রায় ১০ থেকে ১৫ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে বিবির হাওলা, গুপ্তের হাওলা, সুতিরাম ও খরিদা গ্রামসহ চারটি গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আরও ১০-১২টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। ফলে প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছেন। লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে গেছে ফসিল জমি, পুকুর ও ঘের। রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মামুনতক্তি গ্রামে মোস্তফা মাতুব্বরের ঘরের উপর চাম্বুল গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধবিহীন চর কাজল ইউনিয়নের চর শিবার, ধলার চর এলাকায় ২০০টি ঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এছাড়া বড় চর কাজলের ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড তলিয়ে যাওয়ায় আরও ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের আগুনমুখা চরের ৬০টি ঘর এবং চর কারফারমার ৯০টি ঘর পানিতে ডুবে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা হালিম মিয়া। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে আছে ডাকুয়া, গজালিয়া, কলাগাছিয়া ও নলুয়াবাগীর মানুষ।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান জানান, ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাফর রানার নেতৃত্বে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দ্রুত সহায়তা দেওয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available