মানিকগঞ্জ (সদর) প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের কান্ঠাপাড়া থেকে বহলাতলী বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কে সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইটের খোয়া এতটাই নিম্নমানের যে, সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দেওয়া হয়েছে।
এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের (জিওবি মেইনটেনেন্স) আওতায় এলজিইডির অধীনে ২০২৩ সালে এই সড়ক সংস্কারের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ঘিওর উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মীর এন্টারপ্রাইজ ১ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ৬৮৫ টাকায় কাজটি পায়। নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর এবং তা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের এপ্রিলের মধ্যে। কিন্তু সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কাজ অসম্পূর্ণ, ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বহলাতলী বাজার থেকে কবি জাহানারা আরজু উচ্চ বিদ্যালয় মোড় পর্যন্ত অংশে যে খোয়া ফেলা হয়েছে তা নিম্নমানের, যা রোলার চালানোর পরেই পাউডারের মতো ভেঙে যাচ্ছে।
বহলাতলী গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ জানান, বহু বছর ধরে আমরা কষ্ট করছি এই রাস্তার সংস্কার না হওয়ায়। যখন সংস্কার শুরু হলো, ভেবেছিলাম দুর্ভোগের অবসান হবে। কিন্তু যে মানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে কয়েক মাসও টিকবে না।
সুলতানপুর গ্রামের আতোয়ার রহমান বলেন, বহলাতলী বাজার থেকে হাই স্কুল মোড় পর্যন্ত যে খোয়া দেওয়া হয়েছে, তা খুবই নিম্নমানের। সরকার এই কাজের জন্য তো টাকা দিছে। তাহলে ভালো কাজ করে না কেন? কিছুদিনের মধ্যেই এই রাস্তা আবার আগের মতো হয়ে যাবে।
অটোরিকশাচালক মো. রিপন বলেন, রাস্তা খারাপ থাকলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ি আমরা চালকরা। আমার অটোরিকশার টায়ারের চাপে ইট ছাতু হয়ে যায়। আবার রাস্তার দুপাশে কিছু কিছু জায়গায় সামান্য মাটি দিছে, বৃষ্টিতে এই রাস্তা থাকবো না। প্রশাসন দেখে না এগুলা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মীর এন্টারপ্রাইজের মালিক মীর মানিকুজ্জামান মানিক বলেন, আমি সড়ক নির্মাণে পিকেট ইটের খোয়া ব্যবহার করছি। আমি কেন নিম্নমানের খোয়া দিব? যে ইট দেয়া হয়েছে, তা সরকারি ইট।
তবে এলজিইডির পক্ষ থেকে নিম্নমানের খোয়া সরিয়ে নিতে কোনো নির্দেশনা পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি এ ধরনের কোনো নোটিশ পাইনি। কাজ নিয়েও কর্তৃপক্ষের কোনো অভিযোগ নেই।
জেলা এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বলেন, নিম্নমানের খোয়ার বিষয়টি জানার পর ঠিকাদারকে তিন দিনের মধ্যে সেগুলো অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কাজ নিয়মিত তদারকি করা হবে। ঠিকাদার যদি এলজিইডির নির্দেশনা না মানে তাহলে তার কাজ বাজেয়াপ্ত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available