সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: আগামী রোববার থেকে চালু হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সকল কার্যক্রম। ওই দিন পাসপোর্টের অনলাইনের আবেদনকারীরা সশরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদনপত্র জমা ছবি ও বায়োমেট্রিক দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন পাসপোর্ট অফিসের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জামাল হোসেন।
তিনি আরও বলেন, ৩০ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে আবেদনকারীদের online Regestation portal ( ORP) আবেদন শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন ও ৪ মে স্ব শরীরে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডে অবস্থিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আবেদনপত্র জমা এবং বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট সংক্রান্ত অন্যান্য যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন। দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যায় বিতরণের অপেক্ষায় থাকা ৮ হাজার পাসপোর্ট। পুরো পাসপোর্ট অফিস ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। আগুন জ্বলতে থাকে ১৯ জুলাই শুক্রবার সকাল পর্যন্ত।
আগুন দেওয়ার আগে পাসপোর্ট অফিসটিতে লুটপাট চালানো হয়েছিল বলে জানিয়ে ছিলেন ওই সময়ে পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মাহমুদুল হাসান। দুদিন ধরে জ্বলেছিল আগুন। ভবনের নিচতলা থেকে শুরু করে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় থাকা বায়ো এনরোলমেন্ট যন্ত্রপাতি, প্রশাসন শাখা, অফিস সরঞ্জাম, গুরুত্বপূর্ণ নথি, ফাইলপত্র, এবং চতুর্থ তলার রেকর্ডরুম এবং অতিথিশালার সবকিছুই ভস্মীভূত হয়ে যায় আগুনে।
একটি বিধ্বস্ত ভবন ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না এ ভবনে। কয়েকশত তাকার সরকারি সম্পদ নষ্ট হয় আগুনে। পাসপোর্ট অফিসটি পুড়িয়ে দেওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছিল নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, বন্দর, সোনারগাঁ, ফতুলা ও সদর উপজেলাবাসী।
মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদীতে গিয়ে পাসপোর্ট করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নারায়ণগঞ্জের পাসপোর্ট সেবা গ্রহীতাদের। এতে তারা অতিরিক্ত অর্থ ও সময় অপচয়সহ নানা সমস্যায় পড়ছেন। পুড়িয়ে দেওয়া নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসটি সংস্কার কাজ শুরু করে ৬ মাস পর গণপূর্ত বিভাগ। পাসপোর্ট অফিস সংস্কার কাজ সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ জেলা গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম জানান, পাসপোর্ট অফিস ভবনের স্ট্রাকচার ঠিক ছিল। তবে ভবনের পলেস্তার, টাইলস, গ্রিল, যন্ত্রপাতি, সার্ভার, দরজাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন জানুয়ারি মাসে প্রথমার্ধে সংস্কার কাজ শুরু করি এবং এপ্রিল মাসে ২০ তারিখ সংস্কার কাজ শেষ হয়। ওই কর্মকর্তা বলেন স্ট্রাকচার সংস্কার করতে খরচ হয়েছে ৮২ লাখ টাকা । মেশিনারিজ বাবদ কত টাকা খরচ হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা গণপূর্ত বিভাগের ইলেকট্রিক সাইটের উপবিভাগী প্রকৌশলী নুরুল আমিন বলেন কাগজপত্র না দেখে তা বলতে পারছিনা।
গতকাল দুপুরে পাসপোর্ট কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় সংস্কার শেষে ভবনটি নতুনরূপে সাজানো হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা গেটে দাঁড়িয়ে ভবনের নিরাপত্তায় কাজ করছেন। পাসপোর্ট অফিসের আশপাশে দোকান গুলোও নতুন করে রং করছে এবং তারা ধোয়া মোছার কাজ করছেন আবার কেউ কেউ বসাচ্ছেন কম্পিউটার,প্রিন্টারও ফটোকপির মেশিন।
হুমায়ুন কবির নামে এক দোকানী বলেন আমরা প্রায় ১০ মাস পর আবারও এখানে দোকান চালু করছি। স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম বলেন আবারও পাসপোর্ট অফিসটি চালু হওয়ার সংবাদে আমরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available