• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০১:৪৯:৪৬ (11-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০১:৪৯:৪৬ (11-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

মাইকিং ও গ্রেফতার করেও বন্ধ হচ্ছে না চুরি

২১ জানুয়ারী ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:০৪:০০

মাইকিং ও গ্রেফতার করেও বন্ধ হচ্ছে না চুরি

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাইয়ে বিদ্যুৎচালিত গভীর-অগভীর নলকূপ থেকে মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পড়েছে। কালাই উপজেলার আঁওড়া, করিমপুর ও হারুঞ্জা মাঠ থেকে ৪টি গভীর নলকূপ ১০টি ট্রান্সফরমার ও ৭টি মিটার চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির পর মোটা অংকের চাঁদার বিনিময়ে দুর্বৃত্তরা তা ফেরতও দিয়েছে। 

একের পর এক মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩৬ জন চোরকে গ্রেফতার করলেও কিছুতেই চুরি থামছে না। চুরির ঘটনায় প্রতিনিয়তই আতঙ্কে রাত্রি যাপন করছেন এলাকার গভীর-অগভীর নলকূপের মালিকরা।

উপজেলার গভীর-অগভীর নলকূপ মালিকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

১৯ জানুয়ারি শুক্রবার দিবাগত রাতে কালাইয়ে ৩টি মাঠ থেকে ১০টি ট্রান্সফরমার ও ১০ জানুয়ারি এক রাতে ৭টি মিটার এবং গত আড়াই মাসে পৃথকভাবে ১০টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। সবমিলে ২৭টি গভীর-অগভীর নলকূপ থেকে মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার ও মিটারসহ ৩৬ জন চোরকে গ্রেফতার করেছে। চুরির ঘটনায় মালিকদের মধ্যে অনেকেই ঝামেলার কারণে পুলিশের নিকট অভিযোগ করেননি। তবে ট্রান্সফরমারের মালিকরা নিরুপায় হয়ে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করেছেন। আবার অনেকেই করেননি।  

কালাই পল্লীবিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সরবরাহ করা বিদ্যুতে চালু আছে গভীর-অগভীর মিলে প্রায় ১ হাজার ১০০ নলকূপ। গত আড়াই মাসে ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির ঘটনায় প্রায় ২০ জন গভীর-অগভীর নলকূপের মালিক অভিযোগ করেছেন। চুরির পর ফেরত পাওয়া মিটারের নিরাপত্তা সিল কাটা ছাড়াও পানিতে ফেলে দেওয়ায় তা নষ্ট হয়েছে। পরীক্ষার জন্য ওই মিটারগুলো ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সরকার নির্ধারিত ফিতে নতুন মিটার ও ট্রান্সফরমার দেওয়া হয় নলকূপ মালিকদের।

এদিকে নলকূপ মালিকদের দাবি, টাকা না দিয়ে অভিযোগ করলে মিটার ফেরত পাওয়া যায় না। আবার নতুন করে মিটার নিতে গেলে অনেক টাকার পাশাপাশি পল্লী বিদ্যুতের নিয়মকানুনের প্যাঁচে পড়ে তাদের সেচকাজ ব্যাহত হবে। তাদের মতে, এর চেয়ে বরং চোরদের সঙ্গে আপোষ করাই ভালো।

কালাই উপজেলার মোলামগাড়িহাটের মজিবর রহমান বলেন, গত ২৬ অক্টোবর আমার সেচ পাম্পের ৩টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগের কাগজ দেখিয়ে পল্লী বিদ্যুত অফিস থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করে নতুন ট্রান্সফরমার সংযোগ দিয়ে কৃষকের ফসল রক্ষা করছি। ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধে পুলিশসহ  প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

শুক্রবার রাতে কালাই উপজেলার আঁওড়া গ্রামের চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের মালিক জালালউদ্দিন জানান, তিনি ট্রান্সফরমার চুরির বিয়ষটি থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানানোর পরও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালন অবস্থায় বৈদুতিক খুঁটি থেকে ট্রান্সফরমার চুরি করা এতো সহজ নয়। চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের লাইনের সংযোগ কীভাবে দেওয়া আছে তা কেবল বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনই জানেন! বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারী এতে জড়িত রয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

হারুঞ্জা গ্রামের আরেক গভীর নলকূপের মালিক মো. তোজাম মেম্বার জানান, গত ৩দিন আগে রাতের অন্ধকারে তার ৬টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ট্রান্সফরমারের কেবল খোলসটা ছিল, ভেতরের সব তার নিয়ে গেছে। তার ধারণা, সাধারণ মানুষের বিদ্যুতের খুঁটি বেয়ে উঠার ক্ষমতা নেই। প্রশিক্ষিত লোক ছাড়া কেউ ঝুঁকিপূর্ণ এসব খুঁটি বেয়ে উঠতে পারবে না বা সাহস করবে না।

নওপাড়া গ্রামের গভীর নলকূপের মালিক বাবলু মিয়া, কাজিপাড়া গ্রামের বজলার রহমান ও মোজাফফর রহমান বলেন, গত ১০ জানুয়ারি এক রাতে আমারসহ ৭টি গভীর নলকূপের মিটার চুরি হয়েছে। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে মিটারগুলো উদ্ধারও হয়েছে।

পুলিশের কাছে নালিশ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, সেচকাজের জন্য আমাদের সারা বছরই প্রায় মাঠে থাকতে হয়। পুলিশ তো সব সময় আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। তাই বাধ্য হয়ে চোরদের চাঁদা দিয়েই আমাদের সেচ দিতে হচ্ছে। তাদের সঙ্গে বিরোধ করলে সেচযন্ত্র তো খোয়া যাবেই, সঙ্গে প্রাণটাও যাবে।

জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ইউসুফ আলি গভীর নলকূপের ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে চুরি রোধে সমন্বয় করে কাজ করছি। চুরি বন্ধে মাইকিং, লিফলেট বিতরণসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা গ্রাহকদের সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করছি। তাছাড়া মামলার পাশাপাশি চুরি রোধে গ্রাহকদেরও মিটার ও ট্রান্সফরমার পাহারা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নুরে আলম জানান, চুরি রোধে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির সাথে জড়িত সন্দেহে ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ