নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ভাতা পুরোপুরি প্রদান না করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে। নিয়মানুযায়ী অংশ গ্রহণের সম্মানী ভাতা দেয়া হলেও নাস্তা ও লাঞ্চ করানো হয়নি। এবাবদ অর্থ বরাদ্দ থাকলেও তা শ্রমিকদের দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। একারণে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
কারখানা সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরই শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে 'ইন হাউজ ট্রেনিং' করানো হয়। একদিনের এই ট্রেনিং সপ ভিত্তিক সুবিধামতো সময়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ গ্রহণকারী শ্রমিকদের সকাল ও বিকেলের নাস্তা এবং দুপুরের লাঞ্চ করানোসহ সম্মানী ভাতা দেয়া হয়।
প্রতি বছরের মত এবারও এই ট্রেনিং বাবদ ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এতে কারখানার ২৮ টি সপের মোট ৬৫০ জন স্থায়ী শ্রমিক অংশ নেয়। তাদের প্রত্যেককে ভাতা বাবদ মাত্র ৫ শ' টাকা করে দেয়া হয়। কিন্তু প্রশিক্ষণের দিনের খাবার বা এবাবদ বরাদ্দ অর্থ দেয়া হয়নি। এতে শ্রমিকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী শ্রমিক বলেন, প্রতি বছরই প্রশিক্ষণ করলে ভাতা, নাস্তা ও খাবার বাবদ ১ হাজার ৮০ টাকা জনপ্রতি বরাদ্দ থাকে। অথচ এবার শুধু ৫০০ টাকা সম্মানী ও ৮০ টাকার নাস্তা দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে কয়েকদিন থেকে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরইমধ্যে শ্রমিকরা একদিনের কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে মঙ্গলবার দুপুরে ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের ডেকে ওই ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে সবাইকে একদিন ভুড়িভোজের সিদ্ধান্ত নেন বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ।
এ প্রসঙ্গে ট্রেড ইউনিয়নের এক নেতার ভাষ্য, কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের টাকা এভাবে খরচ করার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়কের এখতিয়ার নেই। খরচ করতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি লাগবে। এছাড়া যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে এই টাকা তো শুধু তাদের প্রাপ্য। তাদের না দিয়ে সবাইকে নিয়ে এমন আয়োজন যৌক্তিক মনে করেন না তিনি।
এব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জন্য প্রশিক্ষণ বাবদ ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকা আমি আসার আগেই খরচ করা হয়েছে। বাকী ১০ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে ৬ শ' শ্রমিককে ৫ শ' টাকা করে ভাতা দেয়া হয়েছে। আর খাবার বাবদ ৫৮০ টাকা করে আমাদের কাছে জমা আছে।
এই টাকা আমরা সবাই মিলে খাবো। অর্থাৎ সকল শ্রমিককে নিয়ে একদিন বড় আয়োজন করে নিজেদের মধ্যে মত বিনিময় করাসহ একসাথে খাওয়া হবে। এটা কি প্রশিক্ষণের কার্যবিধির মধ্যে পড়ে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতঃপূর্বে করা হয়নি। তবে এবার এই রীতি চালু করতে চাই। যা আগামীতেও প্রচলিত থাকবে। এতে কারো দ্বিমত থাকতে পারেনা। ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সাথে কথা বলেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available