• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ১৭ই বৈশাখ ১৪৩২ ভোর ০৪:৪২:২৩ (01-May-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ১৭ই বৈশাখ ১৪৩২ ভোর ০৪:৪২:২৩ (01-May-2025)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

শ্রীপুরে বসতবাড়ি ভেঙে সরকারি জমি দখল

৩০ এপ্রিল ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৬:৫১

শ্রীপুরে বসতবাড়ি ভেঙে সরকারি জমি দখল

গাজীপুরের (শ্রীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে সরকারি ১ নম্বর খতিয়ানে ৬ একর জমি জবরদখল করে সিলমুন পাইপ এন্ড ফিটিংস লিমিটেড কারখানার অবৈধ শেড নির্মাণ করেছে। পাশাপাশি সরকারি জমি জবরদখল করে খনন করা হয়েছে পুকুর ও নিরাপত্তা প্রহরীদের ঘর। স্থানীয় হতদরিদ্র পরিবারের দখলে থাকা বসতবাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে এসব সরকারি জমি জবরদখল করে কারখানা শেড নির্মাণ করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়ে নির্মাণ করেছে বিলাসবহুল কারখানা শেড। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি ভূমি দখলমুক্ত করার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের নয়াপাড়া মৌজার ১ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত আরএস ২৮, ২৯, ৩১ ও ৩২ দাগের ৬ একর ২৩ শতাংশ জমি জবরদখল করে নির্মাণ করেছে বিলাসবহুল কারখানা শেড। পাশের খনন করা হয়েছে পুকুর। একই সঙ্গে কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীদের ঘর। সরকার জমি জবরদখল করে চারপাশে দেয়া হয়েছে অস্থায়ী সীমানা প্রাচীর। গত দুবছর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় হতদরিদ্র কয়েকটি পরিবারকে তাদের বসতবাড়ি জোরপূর্বক ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে এ সকল জমি জবরদখল করে। পরবর্তীতে সরকারি ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত জমিতে নির্মাণ করেছে বিলাসবহুল কারখানার শেড। বিলাসবহুল সেডে কারখানার সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এত লম্বা শেড যে চোখের দৃষ্টিতে শেষ অংশ দেখা সম্ভব না। 
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতের আঁধারে বুলডোজার দিয়ে নিমিষেই ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে বেশ কয়েকটি পরিবারকে ভিটেমাটি ছাড়া করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। যাঁরা প্রতিবাদ করছে তাদের ঠিকানা হয়েছে জেলখানা। তাদের থাবায় অনেকেই থাকেন গাছতলায়। অনেকের আশ্রয় হয়েছে আত্মীয়ের বাড়িতে।

শ্রীপুর উপজেলা সার্ভেয়ার মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ত্রেখাইল্লা খালের সীমানা নির্ধারণের মাপজোখ করতে এসে এত বড় সরকারি জমি জবরদখলের বিষয়টি জানতে পারি। কারখানা কর্তৃপক্ষ ৬ একরের বেশি সরকারি ১ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত জমি জবরদখল করে সেখানে বিলাসবহুল একটি শেড নির্মাণ করেছে। পাশাপাশি একটি পুকুরও সরকারি জমি জবরদখল করে খনন করেছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তা প্রহরীদের ঘর সেটাও সরকারি জমির ওপর। সরকারি জমির দাগ চিহ্নিত করে মাপজোখ করে সেখানে খুঁটি পোঁতা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নিবেন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও বরাবর রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।

হতদরিদ্র বৃদ্ধা আফেলা খাতুন বলেন, দীর্ঘ বছর যাবৎ প্রতিবন্ধী স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বসতি স্থাপন করে আছি। হঠাৎ করে এক রাতে বুলডোজারের আঘাতে আমার বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। আমার ছেলে রফিকুল ইসলামকে ধরে নিয়ে কারখানার ভেতর বন্দী করে রাখে। বর্তমানে আমার যেখানে রাত সেখানেই থাকতে হয়। গাছতলায় হয়েছে আমাদের ঠিকানা। 
তিনি আরও জানান, এটি যে সরকারি জমি তাও জানতেন না। স্বামীর ভিটেমাটি জেনে থাকতেন। সরকারি জমি তো সরকার নেয়নি। আমরা গরীব মানুষ। আমাদের জমিজমা নেই আমরা সরকারি জমি ভোগদখল করতে না পারলে কোম্পানি কি করে জবরদখল করে এত বড়বড় ঘর বানাল।

স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, কারখানার আশপাশে বহু জমি সরকারি। সবই কারখানা দখল করছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও মিথ্যা মামলা দেয়। প্রতিবাদ করে অনেকেই জেল খেটেছে। তাদেরকে মুসলেকা দিয়ে এলাকা ছাড়তে হয়েছে। বিভিন্ন ভাবে জমি ক্রয় করার নামে সরকারি জমি জবরদখল করে কারখানার শেড নির্মাণ করছে। একর কে একর জমি জবরদখল করলো অথচ সরকারি লোকজন বাধা দিলো না। গরিব মানুষ একটি খুপরি ঘর বানালে সেগুলো ভেঙে দেয়। গরিবের উপর যত জুলুম।

সিলমুন পাইপ এন্ড ফিটিংস কারখানার প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানটি যেহেতু দুই জেলার সীমান্তে এজন্য কারখানার কাজ শুরুতে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মহোদয়দের চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তখন তারা এসে সীমানা নির্ধারণ করে দেন। তখন সরকারি জমির বিষয়টি সামনে আসেনি। যেহেতু সরকারি জমি আমাদের কারখানার ভেতর রয়েছে সেজন্য কি করণীয় এ বিষয়ে কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে বিস্তারিত জানাতে পারবো।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সজীব আহমেদ বলেন, সিলমুন পাইপ এন্ড ফিটিংস কারখানার দখলে থাকা জমি মাপজোখ করে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। পাশাপাশি কারখানা কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের প্ল্যান অনুমোদন না নিয়ে সরকারি জমি জবরদখল করে অনুমোদনহীন ভাবে কারখানার তিনটি শেড নির্মাণ করেছে এ বিষয়ে আলাদাভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। 

তিনি আরও বলেন, যে সকল ভূমিহীন অসহায় হতদরিদ্র পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেসকল বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ

দাম কমলো জ্বালানি তেলের
৩০ এপ্রিল ২০২৫ রাত ০৯:৩৬:৩৩





প্রকৃত রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
৩০ এপ্রিল ২০২৫ রাত ০৮:০৯:৩৯




শ্রীপুরে বসতবাড়ি ভেঙে সরকারি জমি দখল
৩০ এপ্রিল ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৬:৫১