নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধীনস্থ তিনটি বিভাগের জন্য আউটকাম বেজড কারিকুলাম শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত প্রশক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ ও দর্শন বিভাগের শিক্ষকরা অংশ নেন।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। অনুষ্ঠানে ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বর্তমান শতাব্দীতে শিক্ষাক্ষেত্রে সারা বিশ্বে একটা যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। আমাদের সবকিছুতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন আনা দরকার। নতুন যেকোনো পরিবর্তন হলে শুরুতে সমালোচনা হলেও পরবর্তীতে কিন্তু সকলেই অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। প্রথাগত শিক্ষার সঙ্গে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তিত বিশ্বে জ্ঞানের সাথে যুক্ত হয়েছে দক্ষতা। একটা মানুষ জ্ঞানী হলেও দক্ষতা না থাকলে তার কোনো মূল্য নেই।
তিনি বলেন, প্রথাগত শিক্ষায় অনেকক্ষেত্রে নিজের মধ্যে অহমিকা বৃদ্ধি পায়, প্রাত্যহিক কাজ করার ক্ষেত্রে অনীহা তৈরি হয়। এতদিন একা একা লেখাপড়া করার চেষ্টা হয়েছে এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বা সামষ্টিক জীবন থেকে নিজেকে দূরে থাকার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। এই সবই উন্নত বিশ্বের প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা। একজন খেলোয়াড়, একজন নাট্যশিল্পী, একজন সঙ্গীতশিল্পী নিজের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে ভাবমর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারেন এবং আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হওয়ার যোগ্য। আউট কাম বেজড এডুকেশনে এই আত্মবল তৈরি করা জরুরি। আমরা এমন শিক্ষা দিতে চাই, যে শিক্ষা গ্রহণের পর গ্র্যাজুয়েটেরা প্রতিযোগিতাপ্রবণ এই বিশ্ববাজারে নিজের ক্ষেত্রে নিজেকে যোগ্য ভাববে।
আউটকাম বেজড শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, ব্রিটিশ উপনিবেশ যারা ভারতবর্ষের উপর একটা শিক্ষা ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছিল সেই পদ্ধতিতেই কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো চলছে। তারা ভাবত ভারতীয়রা তাদের মতো জ্ঞানী হতে পারবে না। তাই তারা বাঙালি তথা ভারতবর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থায় ৩৩ নম্বরে পাশের প্রথা চালু করেছিল। কিন্তু তাদের নিজস্ব শিক্ষা ব্যবস্থায় ৬৫ নম্বরে পাশের কারিকুলাম চালু করেছিল। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান মাটির সাথে মিশে গিয়েছিল। তখনও বাংলদেশ সম্পদে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের এখনকার পরিবর্তনের তুলনায় জাপান তাদের শিক্ষা, শিল্প ও অর্থনীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলছে একমাত্র তাদের মানসিকতা ও শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপোযোগী পরিবর্তনের মাধ্যমে। ২০০০ সালের কিছু আগে অস্ট্রেলিয়া তাদের শিক্ষাক্রমকে আউটকাম বেজড করে। এরপর আমেররিকাসহ উন্নত বিশ্ব আউটকাম বেজড কার্যক্রমের দিকে চলে যায়। শিক্ষা বর্তমানে আউটকাম বেজড হচ্ছে, শিক্ষার উদ্দেশ্য এখন দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে। সারাবিশ্বে শিক্ষা কার্যক্রম দারুণ এটা বাঁক নিয়েছে। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রথাগত শিক্ষাকে আউটকাম বেজড এডুকেশনের দিকে নিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আতাউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি পরিচালনা করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম। এসময় কলা আইকিউএসি পরিচালক প্রফেসর ড. মো. সাহাবউদ্দিন, অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. তুষার কান্তি সাহাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available