• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ২৫শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ রাত ০২:৩৯:৪৪ (09-Jun-2025)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • সোমবার ২৫শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ রাত ০২:৩৯:৪৪ (09-Jun-2025)
  • - ৩৩° সে:

বিনোদন

আমির খান যেভাবে ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’

৮ জুন ২০২৫ দুপুর ১২:২৬:৫৮

আমির খান যেভাবে ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’

বিনোদন ডেস্ক: যখন আমির খানকে নিয়ে লিখব বলে খাতা খুলেছি, তখন অটোমেটিক পণ্ডিত জগজিৎ সিংয়ের গাওয়া ‘হোশওয়ালোঁ কো খবর কিয়া’ গানটি ইউটিউবে চলে এসেছে। পরে খেয়াল করে দেখলাম, গানটি আমির খানের ‘সরফারোশ’ সিনেমার গান। কী দারুণ রোমান্টিক গান! সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালে। তত দিনে আমির খান বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। যে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ সিনেমা দিয়ে তাঁর বড় পর্দায় অভিষেক, সেটি মুক্তি পায় ১৯৮৮ সালে। সেই আমির খান পর্দায় নিজেকে ভেঙেচুরে প্রতিবার নতুনরূপে হাজির করে দেখিয়েছেন, কীভাবে নিজের অভিনয়দক্ষতা ফুটিয়ে তুলতে হয়। দেখিয়েছেন, কীভাবে হয়ে উঠতে হয় মিস্টার পারফেকশনিস্ট। তবে মিস্টার পারফেকশনিস্ট হয়ে ওঠারও একটা গল্প আছে। মিস্টার পারফেকশনিস্ট হওয়া এবং সিনেমায় চরিত্রের মাধ্যমে আমির খানের ক্রমাগত পরিবর্তনের গল্পই জানব চলুন।

স্বভাবে
নেটফ্লিক্সের ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’তে হাজির হয়েছিলেন আমির খান। সেখানে তুলে ধরেছেন নিজের জীবনের নানা কাহিনি। জানিয়েছেন, কীভাবে তাঁর নামের পাশে মিস্টার পারফেকশনিস্ট ‘ট্যাগ’ যুক্ত হলো। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ভারতের সমান্তরাল চলচ্চিত্রের বিখ্যাত অভিনেত্রী শাবানা আজমি আমিরকে মিস্টার পারফেকশনিস্ট ‘ট্যাগ’ দিয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে তখন ‘দিল’ সিনেমার শুটিং চলছিল। সিনেমাটির পরিচালক ছিলেন ইন্দ্রকুমার এবং ক্যামেরাম্যান ছিলেন শাবানা আজমির ভাই বাবর আজমি। একদিন বাবর আজমির বাড়িতে সিনেমা নিয়ে আলাপ চলছিল। তখন শাবানা আজমি আমিরকে চা খাওয়ার জন্য বলেন ও জিজ্ঞেস করেন, চায়ে চিনি কী পরিমাণ দেবেন? আমির তখন জানতে চান, গ্লাস কত বড়? শাবানা যখন চায়ের কাপ দেখালেন, তখনো আমির আলাপে মগ্ন এবং সঠিক উত্তরটি দেওয়ার ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। আবার জানতে চান, চামচ কত বড়? অবশেষে আমির এক চা-চামচ চিনি দিতে বলেন চায়ে।

এ ঘটনা শাবানা আজমি কীভাবে সবার কাছে বলতেন, সেটা শোতে বলেছেন আমির খান। শাবানা বলতেন, ‘তুমি যদি আমির খানকে চায়ে চিনি কতটুকু দিতে হবে জিজ্ঞেস করো, তাহলে সে আগে চায়ের কাপের সাইজ জানতে চাইবে।’ শাবানা আজমি গল্পটা এভাবে সবার কাছে বলার একটাই কারণ, আমির খান পারফেকশনের ব্যাপারে কতটা সচেতন, সেটা বোঝানো। এভাবেই মিস্টার পারফেকশনিস্ট ‘ট্যাগ’ আমির খানের নামের পাশে যুক্ত হয়ে যায়।

চরিত্রে
নামের পাশে মি. পারফেকশনিস্ট ‘ট্যাগ’ শাবানা আজমির কল্যাণে যুক্ত হলেও আমির নিজের অভিনীত চরিত্রে ক্রমাগত যেভাবে নিজেকে বদলেছেন, সে কারণেও তাঁকে মিস্টার পারফেকশনিস্ট বলতে কোনো দ্বিধা কাজ করার কথা নয়। নিজের পরিচালনায় হাতেখড়ি যে সিনেমা দিয়ে, সেই ‘তারে জামিন পার’-এ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরেন এবং এর মাধ্যমে তিনি পরিচালক হিসেবে নিজের নৈপুণ্য দেখাতে সক্ষম হন। সেই সঙ্গে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি তাঁর গভীর সচেতনতা ও সহানুভূতিশীল অন্তর্দৃষ্টি তুলে ধরেন।

অন্য তারকারা যেখানে ক্যামেরার পুরো ফোকাস নিজেদের ওপর রাখতে চান, আমির সেখানে ব্যতিক্রম। তিনি নিজেকে পর্দায় তুলে ধরার চেয়ে গল্পের ওপর জোর দেন। ‘রং দে বাসন্তী’র শেষ দৃশ্যে এসে গল্পের প্রয়োজনেই আমির খানের কাছ থেকে সব আলো কেড়ে নেন অভিনেতা সিদ্ধার্থ। অন্যদিকে ‘দঙ্গল’ সিনেমায় প্রথমার্ধে জাইরা ওয়াসিম এবং দ্বিতীয়ার্ধে ফাতিমা সানা শেখ অভিনয় দিয়ে নিজেদের অনায়াসে তুলে ধরার সুযোগ পেয়ে যান। আমির খান ‘দিল্লি বিল্লি’ কিংবা ‘ধোবি ঘাট’-এর মতো সিনেমায় ক্যামিও চরিত্রেও অভিনয় করেছেন। তাঁর উপস্থিতি এসব সিনেমাকে লাভজনক করতে অনেকটাই সাহায্য করেছে। ‘সিক্রেট সুপারস্টার’-এর কথাও এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করার দাবি রাখে। এ ক্ষেত্রেও কোনো দ্বিধা কাজ করেনি তাঁর।

প্রতিটি সিনেমাতেই আমির তাঁর সেরাটা দিয়ে অভিনয় করেন। সেটা তাঁর প্রথম ছবি ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ হোক কিংবা ফ্লপ সিনেমা ‘লাল সিং চাড্ডা’ হোক। ‘দঙ্গল’-এ একজন নাছোড়বান্দা অভিভাবকের চরিত্রে আমিরকে দেখি আমরা। আবার ‘গজনী’র জন্তু স্বভাবের মানুষ হিসেবেও দেখি। ‘লগান’-এ ব্যাটে-বলে ব্রিটিশদের মুখোমুখি হতে দেখি। সেই আমির আবার ‘থ্রি ইডিয়টস’-এ ক্যাম্পাসের তথা সিনেমাপ্রেমীদের প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। ‘পিকে’ দিয়ে ভিনগ্রহ থেকে আসা মানুষ হয়ে ওঠেন।

আমির খানকেও অন্য অভিনয়শিল্পীদের মতো তিন দশকের বেশি ক্যারিয়ারে বিতর্ক, বিব্রতকর অবস্থা ও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতার সাক্ষীও হতে হয়েছে তাঁকে। তবে সুপারস্টারডম অর্জনের কঠিন পথ আমির খান খান সহজেই উতরে গেছেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে নিজের উন্নতি করেছেন এবং নিজেকে নতুন নতুনভাবে উদ্ভাবন করেছেন। ফলে তিনি হয়ে উঠেছেন চলচ্চিত্রজগতের স্বীকৃত ও উল্লেখযোগ্য একজন। সত্যি বলতে কি, যাঁরা অভিনয়শিল্পে নিজেদের মেলে ধরতে চান, আমির তাঁদের জন্য অনন্য আদর্শ।

আমির খানের খুব কমসংখ্যক কাজ ফ্লপ হয়েছে। লোকটা যখন আমির খান, তখন তো পারফেকশনের ব্যাপার থাকেই। তাই তো তিনি মিস্টার পারফেকশনিস্ট।

তথ্যসূত্র: সিইও ম্যাগাজিন, ফিল্মফেয়ার

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ