নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার আজ মঙ্গলবার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বিধ্বস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন।
পরিস্থিতির চাপে পরে তারা শেষমেষ দ্রুত স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টারও কিছু সময় পরে তারা দু'জন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসলে শিক্ষার্থীরা তাদেরকে উদ্দেশ করে "ভুয়া ভুয়া" স্লোগান দেয়।
উপদেষ্টাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের রাগের অন্যতম প্রধান কারণ, তারা এইসএসসি পরীক্ষা পেছানোর ঘোষণা দিতে দেরি করেছেন। সেইসাথে, শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, সরকার নিহত, আহত ও নিখোঁজের সঠিক সংখ্যা আড়াল করছে।
জানা গেছে, দুই উপদেষ্টা এখনো স্কুলের ভেতরেই অবস্থান করছেন। উপদেষ্টাদের ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা তা পারেননি।
এদিকে, উত্তরার দিয়াবাড়ি গোলচত্বর এলাকায় বিক্ষোভ করছেন মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার তারা ছয় দফা দাবিতে ওখানে বিক্ষোভ করছে।
"আমার ভাই মরলো কেন, জবাব চাই, জবাব দাও" স্লোগানে মুখরিত এখন ওই এলাকায়।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, নিহতদের সংখ্যা একশ’রও বেশি। কিন্তু সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে আহত, নিহত ও নিখোঁজের তথ্য গোপন করছে। তাই অবিলম্বে ভুক্তভোগীদের সঠিক তালিকা দিতে হবে।
এর আগে গতকাল সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান এফটি-৭ বিজিআই রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভেতরে বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানের পাইলটসহ এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ২৫ জনই শিশু।
এদিকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরসহ এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। নিহতদের মধ্যে ৬ জনের মরদেহ এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
নিহত ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জনই শিশু, বাকি দুইজনের মধ্যে একজন পাইলট, অপরজন শিক্ষিকা। এ পর্যন্ত ২০টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৮ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এছাড়া বার্ন ইউনিটে দুইজন ভেন্টিলেশনে আছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় দুর্ঘটনায় পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল। যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধার করা শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেয়া হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available