পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের নেছারাবাদে পঞ্চম শ্রেণীর (১১) এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আপস মীমাংসার কথা বলে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. মনজুরুল কবিরের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত মো. মনজুরুল কবির উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের চামি গ্রামের ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারটি ওই নেতার শালিস না মেনে থানায় মামলা দিলে পুলিশ অভিযুক্ত ধর্ষক মো. মনির হোসেন ফরাজী (৫৫) নামের ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
২৭ জুলাই রোববার সকালে এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে।
পুলিশ গ্রেফতার আসামীকে ২৭ জুলাই রোববার সকালে পিরোজপুর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। শিশু ধর্ষণে আপোস মীমাংসার কথা বলে টাকা নেয়ার বিষয়টি গ্রাম চৌকিদার মো. সজীব মাঝি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ভিকটিম উপজেলার চামী মুসলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২৫ জুলাই শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে বাড়ির পাশের মনির ফরাজির দোকানে যায় ওই শিশুটি। দোকানী অভিযুক্ত মনির ফরাজী তাকে লজেন্স খাবার প্রলোভন দেখিয়ে দোকানের ভিতর নিয়ে দরজায় তালা দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনা জানাজানি হলে ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. মনজুরুল কবির অভিযুক্ত ধর্ষকের পরিবারকে আপোস মীমাংসার কথা বলে এক লাখ টাকা নেন। ধর্ষিতার পরিবার বিষয়টি জেনে নেছারাবাদ থানায় মনির হোসেন ফরাজি (৫৫) কে আসামী করে শনিবার রাতে মামলা করেন। পুলিশ আসামী মনিরকে গ্রেফতার করে রোববার সকালে পিরোজপুর আদালতে প্রেরণ করে।
অভিযুক্ত ধর্ষকের মা মাহাফুজা বেগম বলেন, আমার ছেলে একটু অপরাধ করে বসেছে৷ এজন্য তাকে ধরে অনেক মারধর করেছে সাবেক মেম্বার মনজুরুল কবির। পরে মেম্বারের প্রস্তাবে গ্রাম চৌকিদার মো. সজীব মাঝির মাধ্যমে মেম্বারকে এক লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। টাকা দেয়ার পরও আমার ছেলের নামে মামলা হলো কেন? আমরা প্রদানকৃত টাকা ফেরত চাই।
গ্রাম চৌকিদার মো. সজীব মাঝি বলেন, আমি হাত থেকে কোনো টাকা নেইনি। ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. মনজুরুল কবির মীমাংসার কথা বলে সবার সামনে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছিল। পরে মামলা হওয়ায় সে টাকা ফেরৎ দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি। তবে, আমি কোনো টাকা ধরিনি।
অভিযুক্ত মনজুরুল কবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো টাকা নেইনি। কারা টাকা নিয়েছে তা আমি জানি না। তাহলে চৌকিদার সজীব মাঝি টাকা নেয়ার বিষয়ে আপনার নাম বলল কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি, সাবেক ইউপি সদস্য। একটা শালিস বিচারে গেলে নানা লোকে নানা কথা বলতে পারে। তাতে কি প্রমাণ হয়, আমি টাকা নিয়েছি?
নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বনি আমিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রোববার ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে ডাক্তরী পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠিয়েছি ও গ্রেফতার আসামিকে পিরোজপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available