• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ সন্ধ্যা ০৭:০৭:৩৮ (29-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ সন্ধ্যা ০৭:০৭:৩৮ (29-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:

‘বীর নিবাস’ নির্মাণকাজে অনিয়ম: নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরানোর নির্দেশ

জাহাঙ্গীর আলম, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে‘বীর নিবাস’ নির্মাণকাজে অনিয়মের পাঁচ মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া অভিযোগের মিলেছে সত্যতা। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিয়ে চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজের জন্য চিঠি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ।জানাগেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বীর নিবাস নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু কাজ শুরুর পর থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের বালু, ইট ও কাজের মান নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। কাজের মানুন্নয়ন ও অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে উপজেলার পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে (দ্বিতীয় পর্যায়ে ) ফুলবাড়ী উপজেলায় চারটি প্যাকেজে ২০টি বাড়ি এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে (তৃতীয় পর্যায়ে) ৬টি প্যাকেজে ৩৬জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের থাকার জন্য আবাসন নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা।দ্বিতীয় পর্যায়ে পাঁচটি ঘরকে একটি প্যাকেজের আওতায় এনে ২০টি এবং তৃতীয় পর্যায়ে ৬টি ঘরকে একটি করে প্যাকেজের আওতায় এনে ৩৬টি বীর নিবাস নির্মাণের জন্য আলাদা আলাদা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এই নির্মাণকাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হয়েছে। মো. হারুন অর-রশিদ নামের এক ঠিকাদারের প্যাকেজের পাঁচটি কাজ অসমাপ্ত রয়েছে।অন্যদিকে তৃতীয় পর্যায়ের ৩৬টি বাড়ির মধ্যে ৬ জন ঠিকাদারের পাঁচজন ঠিকাদারের কাজ নিয়ে অভিযোগ না থাকলেও ঠিকাদার মো. হারুন অর-রশিদের কাজের নির্মাণ সামগ্রী ও মান নিয়ে অভিযোগ ওঠে। সরেজমিনে ঘুরে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের প্রেক্ষিত তদন্ত কমিটি সাইট পরিদর্শন করে। এসময় তারা ইটের ফিল্ড টেস্ট করেন এবং এতে বেশিরভাগ পুরাতন এবং চুক্তিপত্র বহির্ভূত ইট দেখতে পায়। এছাড়াও সিসি ঢালাইয় ৩ ইঞ্চির স্থলে ২ ইঞ্চি ও ১ দশমিক ৭৫ ইঞ্চি পায় এবং প্রস্থ ২০ ইঞ্চির স্থলে ১৬ থেকে ১৭ ইঞ্চি পায়।বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক, শামসুল হক জানান, প্রধানমন্ত্রী দয়া করে, মায়া করে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য ঘরের বাজেট দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণে অনিয়মের শেষ নেই। ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের ইট-বালু দিয়ে কাজ করছে। বিল্ডিং ঘর তোলার জন্য সিসি ঢালাইয়েও কারচুপি করে পরিমাণে কম দিচ্ছে। কিছু বললেই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখায়। ঠিকাদার হারুন অর রশিদের কাজের মান একেবারে ভালো না। আমি এর প্রতিকার চাই।তদন্ত কমিটির সদস্য ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের প্রেক্ষিত সরেজমিনে তদন্ত করে নিম্নমানের ইট, বালু এবং সিসি ঢালাই কম দেওয়ার সত্যতা পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ঠিকাদার হারুন অর রশীদের নিম্নমানের কাজের সরেজমিন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ঠিকাদার হারুন অর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, বীর নিবাস নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটির সরেজমিন প্রতিবেদনের আলোকে ঠিকাদারকে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিয়ে চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।