• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০১:১৫:২৮ (10-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০১:১৫:২৮ (10-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিডওয়াইফদের টেস্ট বাণিজ্য

২১ আগস্ট ২০২৩ সকাল ০৮:০৮:১৯

নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিডওয়াইফদের টেস্ট বাণিজ্য

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়মের শেষ নেই৷ এবার টেস্ট লিখে (নির্ধারিত) বেসরকারি ক্লিনিকের নাম বলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মিডওয়াইফদের বিরুদ্ধে।

একজন মিডওয়াইফের কাজ গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা। গর্ভবতী নারীকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে অবহিত করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান।

নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (এএনসিওপিএনসি) ১১ নম্বর কক্ষ। এখানে গর্ভবতী নারীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া ও চেকাপ করা হয়। এই কক্ষে দায়িত্বে রয়েছে মিডওয়াইফ সদস্য । প্রতিদিন (পরিবর্তন করে) একজন মিডওয়াইফ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।

এখানকার দায়িত্বরত মিডওয়াইফদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, টেস্ট লিখে পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ক্লিনিকের নাম বলে দেন রোগীদের। এবার এর সত্যতা মিলেছে। সব ধরনের প্রমাণ হাতে এসেছে এশিয়ান টেলিভিশন প্রতিবেদকের কাছে।

রেজাউর করিম রাজু। নবাবগঞ্জের শিকারীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার স্ত্রী গর্ভবতী। স্ত্রীকে নিয়ে ১৯ আগস্ট শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরামর্শ ও চেকাপ করাতে ১১ নম্বর কক্ষে আসেন।

শুরুতেই তার স্ত্রী কাউন্টার থেকে নেওয়া সরকারি টিকিটে (প্রেসকিপসনে) কয়েকটি টেস্ট লিখে (সিল) দেন দায়িত্বরত মিডওয়াইফ অঞ্জনা। এরপর রেজাউর করিম রাজু তার স্ত্রীর উপস্থিতিতে মিডওয়াইফকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এই টেস্টগুলো কী সরকারি হাসপাতালেই হবে?’ জিজ্ঞেস করার সঙ্গে সঙ্গে মিডওয়াইফ অঞ্জনা উত্তর দেন, ‘এগুলো এখানে হয় না। মুক্তি বা প্যারাগন হাসপাতাল থেকে টেস্ট করে নিয়ে আসেন।’

এরপর রাজু বাধ্য হয়ে ‘অঞ্জনার’ কথামত তার স্ত্রীকে নিয়ে যান বেসরকারি ক্লিনিক প্যারাগনে। সেখান থেকে টেস্টগুলো করে নিয়ে এসে রিপোর্ট দেখান।

জানা গেছে, বেসরকারি ক্লিনিকে টেস্টের জন্য কোন রোগী পাঠালে ওই চিকিৎসক বা মিডওয়াইফ পান বড় অংকের কমিশন।

এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রয়েছে টেস্ট বাণিজ্যের অভিযোগ। প্রাথমিক কোন ওষুধ না লিখে রোগীদের দিয়ে থাকেন ২ থেকে ৫টি টেস্ট। যার কমিশন পৌঁছে যায় তাদের কাছে। টাকার জন্য অনেক রোগী টেস্ট না করাতে পেরে অসহায় হয়ে পড়ে।

রেজাউর করিম রাজু অভিযোগ করে এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘স্ত্রীকে নিয়ে এএনসিওপিএনসি রুমে আসলে দায়িত্বরত মিডওয়াইফ অঞ্জনা কিছু টেস্ট লিখে দিলে তাকে জিজ্ঞেস করি, এগুলো সরকারিতে হবে নাকি! অঞ্জনা জানান, এগুলো এখানে হবে না। মুক্তি বা প্যারাগন থেকে টেস্ট করিয়ে নিয়ে আসেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যখাতে যে উন্নয়ন করেছেন তা এরকম কিছু কর্মকর্তাদের কারণে সরকারের বদনাম হচ্ছে। দরিদ্র পরিবারগুলো ইচ্ছে করলেই এসব টেস্ট সরকারি হাসপাতালে করাতে পারেন। কিন্তু তাদের মতো কিছু কর্মকর্তাদের কারণে জিম্মি হয়ে আছে রোগীরা। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নজরদারি দেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে অভিযোগকারীকে সাথে নিয়ে বেলা ১২টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ নম্বর কক্ষে গিয়ে মিডওয়াইফ অঞ্জনার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার হয়তো বিষয়টি ভুল হয়েছে এটা নিয়ে বেশি কিছু বাড়াইয়েন না। প্রতিটি রোগীকে সরকারিতে টেস্ট করার জন্য বলে দেই, হয়তো এটা ভুলবশত বলেছি।’

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শহিদুল ইসলাম এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে মিডওয়াইফ সদস্যদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে।’

এদিকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখছেন না৷ তার অবহেলার কারণেই এমন সুযোগ পান এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা৷ এমনটাই অভিযোগ হাসপাতালে আসা রোগীদের। তারা বলছেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা বিষয়গুলো জেনে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এরকমটা করতে কেউ সাহস পাবে না।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান মুঠোফোনে এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, যেসব টেস্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হয়ে থাকে সেগুলো বাইরে বেসরকারি ক্লিনিকে পাঠানো সঠিক নয়। এছাড়া সরকারি চাকরি করে একজন মিডওয়াইফ টেস্ট লিখে বেসরকারি ক্লিনিকের (নির্ধারিত) নাম বলে রোগী পাঠানো বেআইনী৷

বিষয়টি সত্যতা মিললে ওই মিডওয়াইফের বিরুদ্ধে তাদের অধিদপ্তরের বরাবর বিভাগীয় ব্যবস্থার নেওয়ার জন্য বলা হবে বলেও জানান সিভিল সার্জন। 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ