সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাড়ছে ঢেঁড়শের আবাদ। খরচ কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় ঢেঁড়শ চাষে দিনদিন আগ্রহী হচ্ছে চাষিরা।
সরেজমিনে, সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কোরানীপাড়া গ্রাম ঘুড়ে দেখা গেছে, এ গ্রামের প্রায় প্রত্যেক কৃষকই ঢেঁড়শের চাষ করেছে।
কথা হয় স্থানীয় কৃষক মো. মশিউর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, এবার আমি ২৮ শতাংশ জমিতে ঢেঁড়শের চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৭ হাজার টাকা। প্রতিদিন ক্ষেত থেকে ২০-২৫ কেজি ঢেঁড়শ তুলছি। বাজারে পাইকারি ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে ঢেঁড়শ বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন আমার ঢেঁড়শ বিক্রি থেকে ৭০০-৮০০ টাকা আয় হচ্ছে। ঢেঁড়শ চাষে রোপনের পর প্রায় ৩ মাস ফলন পাওয়া যায়। আশা করি এ বছড় ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা আয় হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢেঁড়শ চাষে খরচ তুলনামুলক কম। কষ্টও কম করতে হয়, কিন্তু লাভ হয় ভালো। তবে ঢেঁড়শ ক্ষেতে কাজ করতে হয় একটু সাবধানে। নিড়ানি দেয়া বা ঢেঁড়শ তোলার সময় হাতে-পায়ে মোজা পড়ে নিতে হয়। নাহলে ফোসকা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় জানান- এ বছর সৈয়দপুর উপজেলায় ঢেঁড়শ আবাদ হয়েছে ৮ হেক্টর জমিতে। তিনি বলেন ঢেঁড়শ একটি জনপ্রিয় সবজি। এতে প্রচুর পরিমান ভিটামি বি ও সি রয়েছে। এছাড়াও এতে পর্যাপ্ত পরিমান আয়োডিন, ভিটামিন এ এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে। ফলে ঢেঁড়শ চাষে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে আমাদের পুষ্টি ঘটতিও পূরণ হচ্ছে।
সৈয়দপুর সরকারি হাসপাতালের সাবেক আরএমও ডা. আব্দুর রহিম জানান, ঢেঁড়শ হজম শক্তি বাড়ায়। এটি খেলে গলাফুলা রোগ হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।
বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রাউফুর রাহিম জানান, উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে ঢেঁড়শ চাষ বেশি হয়েছে। দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি ঢেঁড়শ চাষের জন্য বেশি উপযোগি। তবে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে এঁটেল মাটিতেও ঢেঁড়শ চাষ করা যায়। গ্রীস্মকাল হল ঢেঁড়শ চাষের উপযুক্ত সময়। তবে ফাল্গুন, চৈত্র,আশ্বিন ও কার্তিক মাসে ঢেঁড়শ চাষে সফলতা বেশি আসে। এখন ঢেঁড়শ উন্নত জাতগুলো প্রায় সারা বছরই চাষ করা যায়।
এদিকে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের পোড়ারহাট এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বীজ বপনের ৬ মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে। ফুল আসার কয়েকদিনের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। এ ফল ৩ মাস পর্যন্ত তোলা যায়। এখন অনেক জাতের ঢেঁড়শরই চাষ হচ্ছে। তবে বারি জাতের ঢেঁড়শে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া যায়। অনেকসময় চারা রোপনের পর ক্ষেতে পোকার আক্রমন হয়। এ পোকা গাছের পাতা ও ফলের নরম অংশ খেয়ে ফেলে তাই এ সময় চাষিদের সতর্ক থাকতে হয়। জমি পরিচ্ছন্ন রাখতে পারলে পোকা সহজেই দমন করা যায়।
বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমি কৃষকদের যে কোন আবাদে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। কোন জমি যাতে ফাকা পড়ে না থাকে সেদিকে আমরা কড়া নজর রাখছি। কৃষকদের কোন সমস্যা হলে তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে পরিষদ থেকে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available