কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: ঈদুল আজহার পর কুষ্টিয়ার বিভিন্ন বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম সেই সাথে বাজারে সবজির সরবরাহও কম। সবজির চাহিদা কম ও ক্রেতা কম থাকায় সব ধরনের সবজির দামও কিছুটা কমেছে। তবে আগামী সপ্তাহে লোকজন ফিরলে সরবরাহ বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
১০ জুন মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার পৌর বাজার, বড়বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের লম্বা ছুটির কারণে চাকরিজীবী ও মেসেজ ছাত্রছাত্রীরা অধিকাংশ গ্রামের চলে গেছেন। আবার স্থানীয়রা যারা আছেন, প্রত্যেকার বাসায় কোরবানির মাংস। এ কারণে সবজির চাহিদা কম। আবার কুষ্টিয়ার বাজারে সবজি আসছেও কম। কিন্তু চাহিদা কম থাকায় দামও কমছে। ঈদের আগের দিনের তুলনায় সব ধরনের সবজি কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা করে কমেছে। আগামী সপ্তাহ থেকে মানুষের সমাগম বাড়তে থাকবে। তখন সবজির চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই বাড়বে। তখন দামও বাড়তে পারে, আবার আরও কমতেও পারে। এটা নির্ভর করবে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের পর সবজির দোকানগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ রয়েছে। অল্প কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও তাতে পণ্য ও ক্রেতা দুই-ই কম।
সবজি বিক্রেতারা সম্রাট জানান, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চাহিদা ও সরবরাহ ছিল। তবে ঈদের দিন থেকে চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই কমেছে। ঈদের আগের দিন টমেটো ও শসা ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, আজকে টমেটো ৫০ টাকা আর শসা ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। একই ভাবে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা পোটল, করলা, বরবটি, ঝিঙা, বেগুন এখন ৪০ টাকা কেজিতে নেমেছে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। চাহিদা বাড়লে সরবরাহও বাড়বে।
সকালে পৌর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারটিতে এখন অধিকাংশ সবজি দোকানই বন্ধ। অল্প কয়েকটি দোকান খোলা রয়েছে।
এ বাজারের সবজি বিক্রেতা মুন্না বলেন, ঈদ করতে বেশিরভাগ চাকরিজীবী ও ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই গ্রামে চলে গেছে। এজন্য সবজির চাহিদাও কম। তাছাড়া এখন প্রত্যেকের ঘরে-ঘরে মাংস। সবমিলিয়ে চাহিদা কম থাকায় সরবরাহও কম। যে সবজি আসছে, বিক্রি তার তুলনায় আরও অনেক কম। এ কারণে সরবরাহ কম থাকলেও সব ধরনের সবজির দামও এখন কম। চাহিদা না থাকায় আমরাও কম সবজি তুলছি। আগামী এক-দুদিন দাম এমন কম থাকতে পারে। এরপর আবার বাড়তে পারে। কারণ, টানা কোরবানির মাংস খাওয়ার পর অনেকেই সবজি খেতে চাইবেন। তখন বাজারে সবজির চাহিদা বাড়বে। আর চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।
জনি নামের এক ক্রেতা বলেন, মানুষের বাসায় কোরবানির মাংস থাকার কারণে এখন সবজির চাহিদা কম। তবে আমাদের পরিবারের সবাই মাংসের পাশাপাশি সবজি খাই। সেজন্য বাজারে সবজি কিনতে এলাম।
দাম নিয়ে তিনি বলেন, চাহিদা কম থাকায় এখন দাম কিছুটা কম আছে। তবে চাহিদা বেড়ে গেলে দাম অটোমেটিক বাড়িয়ে দেবে বিক্রেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের দুই দিন আগে শসা, কাঁচা মরিচ, গাজর, টমেটো ও লেবুর দাম বেড়েছিল। সালাদ তৈরির উপকরণ হওয়ায় এসব পণ্যের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। ডিমের দামও বাড়তি ছিল। তবে ঈদের দিন পার হতেই ধীরে ধীরে সেই দাম কমতে শুরু করেছে।
বর্তমানে প্রতি কেজি হাইব্রিড জাতের শসা ৩০-৪০ টাকা ও দেশি শসা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি গাজর ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর টমেটো বর্তমানে ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১৫-২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
অন্যদিকে, পটল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। কাঁকরোল, বরবটি, কচুর লতি, উস্তা, বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনে বাজারে আবারো আগের মতন ক্রেতা সমাগম বৃদ্ধি পাবে স্বস্তি ফিরে আসতে পারে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বলে আশা করা হচ্ছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available