মো. হানিফ মেহমুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাটাইডুবি এলাকা থেকে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশের একটি বাড়ির ঘর থেকে ভিজিএফের ১৭ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
৩ জুন মঙ্গলবার রাত ৮টাই চাটাইডুবি এলাকার শরিফ উদ্দিনের বাড়ি থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
জানা যায়, স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে রাতে শরিফ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে একটি ঘরে তল্লাশী চালায়। এসময় ১৭ বস্তা চাল দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বাড়ি ঘেরাও করে রাখে এবং পুলিশকে খবর দেয়। পরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এসব চাল উদ্ধার করা হয়৷
তরিকুল ইসলাম, বারিউল ইসলামসহ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মঙ্গলবার সকালে ভিজিএফের কার্ড নিয়ে গিয়েও চাল না পেয়ে ফিরে আসে। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে শরিফের বাড়িতে তল্লাশি করে। তাদের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও ইউপি সদস্য মনিরুল খোকা অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে চালগুলো বিক্রি করেছিলেন।
এর আগে এই বাড়ি থেকে আরও ৭৫ বস্তা হতদরিদ্রদের ইদ উপহারের চাল বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান বাড়ির মালিক শরিফ উদ্দিনের মা ফাতেমা বেগম। তিনি আরও জানান, গত ইদুল ফিতরের সময়েও প্রায় ১০০ বস্তা চাল বাড়িতে রাখা হয়েছিল। তবে বাড়িতে চাল রেখে যাওয়া কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে মিলন নামের একজনকেই তিনি চিনেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় চায়ের দোকানদার মো. বাবু বলেন, বাইরের কিছু লোক শরিফের বাড়ি থেকে দুটি টিলারে করে গত কয়েকদিন আগে ৬০-৭০ বস্তা চাল নিয়ে যায়। জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা মিলে এই চাল বিক্রি করেছে। হতদরিদ্রদের চাল মেরে দিয়ে তারা নিজেদের পকেটে ভরেছে।
এ নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন৷ প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম খোকা মুঠোফোনে জানান, এই চালের সাথে আমাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। নিয়ম অনুযায়ী যার কাছে কার্ড পাওয়া গেছে, তাদেরকে চাল বিতরণ করা হয়েছে। চাল নেয়ার পর তারা কারো কাছে বিক্রি করে হয়ত মজুদ করেছিল। এর সাথে কে বা কারা জড়িত তা আমাদের জানা নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর আলম বলেন, স্থানীয় লোকজন ভিজিএফের চাল আটক করেছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে ১৭ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগে আরও প্রায় ৭৫ বস্তা চাল ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চালগুলো জব্দ করে থানায় হস্তান্তর করা হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ১৭ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available