নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নেতা ও মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেছেন, ৫ তারিখে শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ পালিয়ে যাবার পর প্রায় ৭ দিন সারাদেশে কোন থানা প্রশাসন ছিল না। এরকম ক্ষতি করার পরও কিছু লোক চিন্তা করে শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসবে। যারা এরকম দুঃস্বপ্ন দেখেন তাদের আমরা অনুরোধ করবো, শেখ হাসিনা ১৬ জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত যে জুলুম করেছে, পাখির মত মানুষ মেরেছে, যে ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিভিশনে দেখানো হয় সেগুলো একটু দেখার চেষ্টা করবেন।
১৯ জানুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা এলাকায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মহানগর বিএনপি ও ১৩নং ওয়ার্ড বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল আয়োজিত কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
খোরশেদ বলেন, আমরা এরশাদকে বলি স্বৈরাচার। এরশাদ তো মাত্র ১৫ জনকে মেরে স্বৈরাচার খেতাব পেয়েছে। শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে শুধু বিএনপির ১ হাজারের মতো নেতাকর্মীকে হত্যা গুম করেছে। আর এই ৫ আগস্ট উপলক্ষ্যে আন্দোলনে ২ হাজার মানুষকে হত্যা ও ২০ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ এর অধিক মানুষ চিরজীবনের জন্য অন্ধ কিংবা পঙ্গু হয়ে গিয়েছে। এরকম হত্যাকারীর এদেশে কোনো ঠাঁই হতে পারে না।
নারায়ণগঞ্জে অনেক বাঘ ভাল্লুক দেখেছি রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছে। তাদের পালিয়ে যাবার ইতিহাস এ প্রথম না। তারা সুবিধাজনক সময়ে বাঘ হিসেবে রাস্তায় নামে আবার বিড়ালের মত পালিয়ে যায়। এরকম কয়েক দফায় তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধ রাখতে চাই, আমরা এমন কোনো কাজ করবো না যেন এরকম ওসমানদের মত, তথাকথিত বাঘ চাটুকারদের হায়েনা বাহিনীর মত আমাদের পালিয়ে যেতে না হয়।
৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের নেতা তারেক রহমান আপনাদের নিয়মিত অনুরোধ করছেন যেন বিএনপি জনগণের দলে পরিণত হয়, মানুষের বন্ধুতে পরিণত হয়। তারেক রহমানের আদেশ আমাদের কাছে শিরোধার্য। আমরা তারমত করে দল করবো মানুষ যেন বলতে না পারে আওয়ামী লীগের লোকের মত বিএনপির লোক।
পদ পদবি মুখ্য বিষয় না। দলকে ভালোবাসলে নিজের অবস্থান থেকে ভালোবাসতে পারবেন। আপনি বিএনপিকে ভালোবাসতে আপনার পদ পদবির প্রয়োজন নেই। আপনি ৫ জন মানুষের কাছে যদি বিএনপির কথা বার্তা তুলে ধরেন এতেই দলের উপকার হবে।
দয়া করে আমাদের কোন লোক জুলুম নির্যাতনের মত কাজ করবেন না। আমাদের এখানে অনেকে এসে বলে এই ওই তো এটা সেটা করেছে। আমরা বলি কেউ কুকুর হলে কি আপনিও কুকুর হবেন? অবশ্যই না। আমাদের অনেক ভাই বন্ধু যারা বিভিন্ন দেশে থেকেও প্রকাশ্যে গোপনে চাঁদাবাজিতে সম্পৃক্ত হচ্ছে। আপনারা এসব করবেন না কারণ, আপনাদের এতে করে অবশ্যই ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে এবং এতে করে বিএনপির ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
জিয়াউর রহমান তখন আল্লাহর ওলির মত ছিলেন কারণ তিনি সৎ রাজনীতিবিদ ছিলেন। এর প্রমাণ শেখ হাসিনা। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা এমন কোন দোষ নাই যা তার নামে খুঁজে বের করে নাই। অথচ জিয়াউর রহমানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কোথাও ১০ বিঘা জমি ফ্ল্যাট আছে তা শেখ হাসিনা প্রমাণ করতে পারে নাই। জিয়াউর রহমান তার চাকরি জীবনে তার সহকর্মীদের নিয়ে সাভারে তিন শতাংশ জমি কিনেছিলেন যা পরে তথাকথিত এক এগারোর সরকার রাস্তা করে দেয়। তার পৈতৃক সম্পত্তি ব্যতীত তার কোন সম্পদ নেই। এজন্য আমি তার সততার জন্য আমি মনে করি এদেশের অনেক অলি আউলিয়ার সাথে তার তুলনা করা যেতে পারে।
আমাদের নেত্রী যেই ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আমাদের নেত্রী দেশের বাইরে যেই নির্যাতন সহ্য করেছেন তার কর্মী হয়ে আমাদের ত্যাগ স্বীকার করা শিখতে হবে। দেখেন খালেদা জিয়া চাইলে শেখ হাসিনার সাথে আপস করে বিদেশ চলে যেতে পারতেন। উনার কষ্ট করে জেল খাটতে হতো না। শেখ হাসিনা ৫ মিনিটে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। উনি দেশের কথা চিন্তা করে নাই এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কথাও চিন্তা করে নাই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উচিৎ শেখ হাসিনাকে এবং শেখ পরিবারকে আজীবনের জন্য বয়কট করা। উনি দেশের মানুষকে ভালোবাসে না কারণ দেশের মানুষ উনাকে উৎখাত করেছে কিন্তু উনার নেতাকর্মীদের জন্য উনার ভালোবাসা থাকা দরকার ছিল।
তিনি আরো বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশের বাইরে উনার কোনো প্রভু নেই। এই দেশ আমার এই দেশেই আমি মরতে চাই। আমাদের নেত্রী কিন্তু হাসিনার তথাকথিত আদালতে সাজা দেয়া হলেও একদিনের জন্য পালিয়ে যায় নাই আমাদের ছেড়ে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি নেতা আনোয়ার মাহমুদ বকুল, নাজমুল কবির নাহিদ, শিব্বির খন্দকার, রানা মুজিব, শওকত খন্দকার, আনিসুর রহমান, ফারুক মাল, রাসেল আহমেদ মনির, মিরাজ ভূইয়া, শেখ মো. আসলাম, আব্দুল হাই, আলেক চান, মিরাজ ভূইয়া, শহিদুল ইসলাম সেন্টু, মো. চঞ্চল, দীন ইসলাম দেলু, মনা, পমেল হোসেন, মাসুদ আহমেদ, মিঠু, মহিউদ্দিন, আকরাম পলাশ, রিপন শিকদার, শ্রমিক নেতা জামাল হোসেন, হকার্স দল নেতা মো. মুসা, ছাত্রদল নেতা অনিক প্রমুখ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available