• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ০৬:৪২:২৭ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ০৬:৪২:২৭ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

সরিষা ফুল থেকে ২শ’ কোটি টাকার মধু উৎপাদিত হচ্ছে

১ জানুয়ারী ২০২৪ দুপুর ০১:০১:০১

সরিষা ফুল থেকে ২শ’ কোটি টাকার মধু উৎপাদিত হচ্ছে

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: চলতি রবি মৌসুমে গুরুদাসপুরে ৩৫০ হেক্টর সরিষা জমির পাশে মৌয়ালরা ৬৮০টি মৌবাক্স বসিয়েছেন। সেখান থেকে ৬ হাজার ৩৭৫ টন মধু সংগৃহীত হবে। প্রতি কেজি মধু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। সে হিসাবে শুধু সরিষা ফুল থেকে ২শ কোটি টাকার উপরে মধু সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে মতে, চলতি মৌসুমে গুরুদাসপুরে ১ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১৩৫ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে চলনবিল অংশে চাষ হয়েছে ৭৫০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি বছর সরিষার ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে চলনবিল। সরিষা ফুল কেন্দ্রিক মধু সংগ্রহে মৌয়ালরা ব্যস্ত সময় পার করছে।

৩০ ডিসেম্বর শনিবার বিকালে গুরুদাসপুর উপজেলার চলনবিল কেন্দ্রিক রুহাই মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। খেতের পাশে শত শত মৌবাক্স পেতেছেন মৌ চাষিরা। মৌমাছির দল এক ফুল থেকে অন্য ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে এনে জমা করছে। নির্দিষ্ট সময় পর পর মৌয়ালরা বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করে তা বাজারজাত করছেন।

মৌয়ালরা জানান, মধু সংগ্রহের জন্য কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হয় বক্স। রোদ কিংবা বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে বাক্সের ওপরের অংশ কালো রঙের পলিথিন ও পাটের তৈরি চট দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হয়। ছিদ্র পথ দিয়ে মাছিগুলো বাক্সের ভেতরে প্রবেশ করে। বাক্সে বিশেষ কৌশলে রানী মৌমাছিকে আটকে রাখা হলে শ্রমিক মাছিগুলো রানীকে অনুসরণ করে বক্সে সমবেত হয়। প্রতিটি মৌবক্সে সাত থেকে ১০টি কাঠের ফ্রেমের সঙ্গে মাছি মধু সঞ্চয় করে। পরে মৌবাক্স বের করে মেশিনের মাধ্যমে বিশেষ কৌশলে ঘুরিয়ে সংগৃহীত মধু বাজারে বিক্রি করা হয়।  

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লা বাজারের মৌচাষি দিগন্ত মন্ডল (২০) জানান, সরিষা, লিচু, বড়ই, কালো জিরা, ধনিয়া ফুলকে কেন্দ্র করে বছরে ৬ মাস মধু সংগ্রহ করা হয়। তার ১শটি মৌবাক্স থেকে সপ্তাহে ৩০০ থেকে ৩২০ কেজি মধু উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি কেজি মধুর বর্তমান বাজার দর ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা হিসাবে তিনি দৈনিক ১৫ হাজার টাকা আয় করছেন।

দিগন্ত মন্ডল আরও জানান, বছরের অবশিষ্ট ৬ মাস মৌমাছিগুলোকে চিনি মিশ্রিত তরল খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়। সেক্ষত্রে চিনি, শ্রমিকের মজুরি, মৌবাক্স খরচ মিলিয়ে বছরে ব্যয় ১২ লাখ টাকা। খরচ বাদে বছরে এখান থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। চলনবিলে উৎপাদিত মধুর স্থানীয় বাজার, দেশীয় কোম্পানি ও অনলাইন বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তাদের উৎপাদিত মধু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করা হয়। পাইকারী পর্যায়ে এপি, ডাবর, প্রাণ কোম্পানি তাদের উৎপাদিত মধু সংগ্রহ করে।

নাটোর জেলা মৌচাষি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলিপ মন্ডল বলেন, তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মৌচাষ শুরু করেছেন। লাভজনক পেশা হওয়ার কারণে তাকে অনুসরণ করে তার এলাকার ৪০টি মৌ খামার গড়ে উঠেছে। এতে অনেকেই বেকারত্ব ঘুচিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে বীজ, সার ও উপকরণ প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এতে সরিষা আবাদ মধু সংগ্রহ দুটোই বেড়েছে। জমির পাশে মৌবাক্স স্থাপনের ফলে সরিষার ফলন ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। মৌচাষে খরচ কম, লাভ বেশি বলে তরুণরা ঝুঁকছেন এবং স্বাবলম্বী হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে এবার ৬ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য ২শ’ কোটি টাকার ওপরে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ