• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ১৪ই চৈত্র ১৪৩০ রাত ০৮:৫৪:৫২ (28-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ১৪ই চৈত্র ১৪৩০ রাত ০৮:৫৪:৫২ (28-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

রামুতে কোনভাবেই থামছে না ফসলি জমি ও পাহাড় কাটা

২২ জানুয়ারী ২০২৩ সকাল ১১:৫১:৪৯

রামুতে কোনভাবেই থামছে না ফসলি জমি ও পাহাড় কাটা

মোঃ নুরুল হক সিকদার, রামু (কক্সবাজার) : কক্সবাজারের রামুতে কোন ভাবেই থামছে না ফসলি জমির মাটি ও লাল মাটির পাহাড় কাটা। বন ও পরিবেশ আইন অমান্য করে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় একটি চক্র অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করলেও তেমন কোন পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রশাসনের।

স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায় করলেও তা আমলে নিচ্ছেন না মাটি ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন স্থানে মাটি সরবরাহের জন্য রয়েছে পিক-আপ (মিনি ট্রাক)। মাটিবাহী এসব ভারী যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে। পাহাড় খেকো ও মাটি বেপারীদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ থাকলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আইন অমান্য করে এস্কেভেটর কিংবা শাবল-কোদালে দিবা-রাত্রি চলছে ফসলি জমির মাটি ও পাহাড় কাটার মহোৎসব। পাহাড় কাটায় ছোট বড় ২-৩ টি এস্কেভেটর দিয়ে বড় বড় পাহাড়গুলো কাটা হয়। ২০ থেকে ৩০টি পিক-আপে (মিনি ট্রাক) যোগে এসব পাহাড়ি টিলার মাটি বিভিন্ন জয়গায় নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারি উন্নয়নের দোহাই দিয়ে উপজেলার সবর্ত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কয়েকটি মাটি কাটা সিন্ডিকেট। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় খালখন্দ, বাড়িঘর নির্মাণে ভরাটের কাজে আর ফসলি জমির মাটির বেশির ভাগ ব্যবহৃত হচ্ছে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১৯টি ইট ভাটায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে ট্রাক দিয়ে এসব ভাটায় ইট প্রস্তুতের জন্য মাটি জমা করা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা এক শ্রেণির দালাল দিয়ে সাধারণ কৃষককে লোভে ফেলে ফসলি জমির মাটি বিক্রিতে উৎসাহিত করছেন। আর কৃষকরা লোভে পড়ে নগদ টাকার আশায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে দেন। ৬-১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে অনেক জমিই ডোবায় পরিণত হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে জোর করে ফসলি জমি কিংবা টিলার মাটিও কেটে নিচ্ছে কিংবা বিক্রিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আরও কয়েকটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটগুলোর নিয়ন্ত্রণ করেন ক্ষমতাধীন দলের কয়েকজন প্রভাবশালী সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধি। মূলত এ জনপ্রতিনিধিরাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তথা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ মাটির ব্যবসার সুযোগ করে দেন। আর এর বিনিময়ে তাদের পকেটে ঢুকছে লাখ-লাখ টাকা।

স্থানীয়দের অভিমত, প্রতি বছর শত একর ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন আবাদী জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন ও জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে। তাদের অভিমত, বেপরোয়া মাটি খেকোদের না রুখলে রামগড়ের আশপাশের পাহাড়গুলো অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে। এতে পরিবেশ বিপর্যয়সহ রয়েছে প্রাণহানীর আশংকা।

অপরদিকে, পাহাড়ের লালমাটি ব্যবহার করা হচ্ছে বাড়ি নির্মাণ, ডোবা ভরাট, রাস্তা সংস্কার, রাস্তা নির্মাণ, বিভিন্ন বেসরকারি ও মালিকানাধীন স্থাপনা নির্মাণ এবং ইট ভাটাসহ বিভিন্ন কাজে। অনেকে আবার অনুমতি ছাড়াই পুকুর কাটার কথা বলে মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। শুধু দিনের আলোয় নয়, রাতের আধাঁরেও চলে লাল মাটির পাহাড় কাটা। প্রশাসনের নজরদারি এড়াতে মাটি ব্যবসায়ীরা রাতের সময়কে উত্তম হিসাবে বেছে নেন।

বিগত কয়েক বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড়-মাঝারি আকারের শতাধিক পাহাড় টিলা কেটে সাবাড় করা হয়েছে। কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের লট উখিয়ার ঘোনা এলাকায়  পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটি চাপায় কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। বর্তমানে রাজারকুল ইউনিয়নের পাঞ্জেগানা সোনাই ছড়ি রাস্তার মাঝামাঝি তেঁতুল গাছ তলি নামক এলাকা,নূলইক্কার কাটা,কাঁঠালিয়া পাড়া,চৌকিদার পাড়া, নাসিতা,ফরেস্ট অফিস, পূর্ব রাজারকুল, সিকদার পাড়া। জোয়ারিয়ানালার সিকদারপাড়া, আশকরখিল, মহিষকুম, মোরাপাড়া, ফরেষ্ট রোড,মাদ্রসা গেইট, ছাগইল্ল্যাকাটা।, রশিদগরের কানচিরাঘোনা, লাইল্যাঘোনা, কালিরছড়া, মোরাপাড়া। কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের লট উখিয়ার ঘোনা,পশ্চিম গনিয়াকাটা,ঝর্ণামুড়া, মনিরঝিল। দক্ষিণ মিঠাছড়ি, খুনিয়া পালং ও চাকমারকুল ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ফসলি জমি ও পাহাড় কাটা  হচ্ছে। নির্বিচারে পাহাড়, টিলা কাটার কারণে বনাঞ্চলও ধ্বংস হচ্ছে। এতে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। এছাড়া বর্ষায় পাহাড়গুলোতে ব্যাপক ধসের আশংকা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিন্ডিকেটের এক সদস্য জানান, এক পিক-আপ পাহাড় কাটা মাটি বিক্রি করা হয় ১২শ থেকে ১৪শ টাকায়। আর ধান্যজমির মাটি বিক্রি হয় ১৩শ টাকা। মাটি বেপারি সিন্ডিকেট ইটের ভাটায় সরবরাহ করা এক পিক-আপ  মাটি বিক্রির ১৩শ টাকার মধ্যে পায় ১১শ টাকা আর ২শ টাকা যায় সিন্ডিকেটর প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী কথিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে।

অথচ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করা নিষিদ্ধ।

এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় প্রশাসন জেল জরিমানা  না করায় পুরোদমে মাটি কাটার উৎসব চলছে। অনেক মাটি ব্যবসায়ী কৌশল পরিবর্তন করে দিনের বদলে রাতের বেলায় লাল মাটির পাহাড় কেটে সাবাড় করছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রামীণ পাকা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মাটির ট্রাক চলাচলের কারণে সড়ক নির্মাণের দুই/এক বছরের মধ্যে তা ভেঙে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সড়কে দ্রুত গতির বালু ও মাটিবাহী গাড়িগুলোর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা ও চলাচলে অসুবিধায় পড়ে স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

গ্রীন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্ট কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কায়সার মাহমুদ বলেন, সরকারিভাবে পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষাকারী এ পাহাড় রক্ষায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর ভূমিকা দরকার।

পরিবেশ অধিপ্তরের কক্সবাজার অঞ্চলের পরিচালক ফরিদ আহমেদ বলেন, পাহাড় কাটা গুরুতর অপরাধ। এ বিষয়ে দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ








নোয়াখালীতে এক পুকুরে ধরা পড়ল ১০০ ইলিশ
২৮ মার্চ ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:০৯:২০

নওগাঁয় অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত
২৮ মার্চ ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:০১:৪৫