নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পাবলিক কোয়ালিশন (বিপিসি)। একই সাথে জরুরি রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও নাগরিক পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
২ জুলাই বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানিয়েছে বিপিসি।
বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সংঘটিত হচ্ছে ধর্ষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন ও হত্যার মতো নৃশংস অপরাধ। বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হলো, কিছু ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে, যা কেবল ভুক্তভোগী নারীর নয়- তার পুরো পরিবার ও সমাজের মর্যাদাকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ অবস্থা একটি সভ্য সমাজের জন্য চরম লজ্জা ও অনুতাপের বিষয়।
এতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ পাবলিক কোয়ালিশন ও উদ্বিগ্ন নাগরিকরা- এ ধরনের সহিংসতা ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নারীর সম্মান, সম্ভ্রম ও নিরাপত্তা রক্ষায় রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি স্তরে একযোগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
১. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ : নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দ্রুত, নিরপেক্ষ ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কার্যকর করতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ধর্ষণ বা নিপীড়নের ভিডিও দ্রুত সরিয়ে ফেলা, অপরাধীদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনতে সাইবার গোয়েন্দা ইউনিট শক্তিশালী করা জরুরি। ভুক্তভোগী নারী, শিশু ও তাদের পরিবারের সম্মান, গোপনীয়তা, নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের বিষয়গুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে একটি মানবিক সহায়তা ও সুরক্ষা কাঠামো গড়ে তোলা হোক। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা, আইনি সহায়তা ও নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসন, সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
২. সামাজিক-সাংস্কৃতিক পদক্ষেপ : পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমে নারী-পুরুষ সমতা, সম্মান, সহমর্মিতা ও মানবিকতার চর্চা জোরদার করতে হবে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও ধর্মীয় প্ল্যাটফর্মগুলোতে মানবিক ও নৈতিক শিক্ষার বয়ান নিয়মিত প্রচার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
৩. নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের করণীয়: সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের প্রতি আমাদের অনুরোধ- ভিকটিমের পরিচয় ও সম্মান রক্ষা করুন; তাদের ব্যক্তিগত দুর্ভোগ যেন আরেকবার গণমাধ্যমের মাধ্যমে যেন পুনঃনিপীড়নে পরিণত না হয়। সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে স্কুল-কলেজে আলোচনা, নাটক, ক্যাম্পেইন ও কাউন্সেলিং চালু করতে হবে। যুবসমাজকে এ বিষয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ পাবলিক কোয়ালিশন মনে করে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে রাষ্ট্র, সমাজ ও নাগরিকদের সম্মিলিত প্রতিরোধই একমাত্র পথ। এই দায়িত্ব এড়ানো আমাদের কারো পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা আবারও বলছি- ভুক্তভোগী নারীর সম্মান রক্ষা হোক, অপরাধীর বিচার হোক।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available