পুবাইলে এতিম খানা ও মাদ্রাসার নামে ভুয়া রেজুলেশন করিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
পুবাইল (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের পুবাইলে এতিম খানা ও মাদ্রাসার নামে ভুয়া রেজুলেশন করিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।গাজীপুরের সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার বরাদ্দকৃত ইসলামিক ফাউন্ডেশন তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, অনাথ আশ্রম ও বৃদ্ধাশ্রমে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১৭২ টন চাল বরাদ্দ দেয়।তবে এক বিশেষ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে এই সরকারি বরাদ্দ গ্রহণ করেছে। অতিরিক্ত এতিম দেখানো, ভুয়া রেজুলেশন কাগজ, সাজানো ছবি ও মনগড়া তথ্য দিয়ে চাল গ্রহণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।উল্লেখ্য বরাদ্দকৃত চাল গ্রহণ করার সাথে সাথেই বিক্রি করে দিয়েছে নগদ টাকায়।বিশেষ করে কয়েকটি মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, তাদের উল্লেখিত এতিমদের সংখ্যা ও কাগজপত্র প্রকৃত তথ্যের সঙ্গে কোনো মিল নিই। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পুবাইল থানা ৪১ নং ওয়ার্ড পাঠানবাড়ি কাসিম উলুম মসজিদ ও এতিমখানার নামে ৬০জন এতিম ছাত্রের ছবি ও তথ্য দিয়ে ৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি ভুয়া কমিটির কাগজ দিয়ে।অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে ১টন চাউল উত্তোলন করে ঐ ভুয়া কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান পাঠান ও সদস্য সুজন পাঠান ইসলামি ফাউন্ডেশনের মডেলের শিক্ষক হাফেজ আব্দুল কাইয়ুম মাছুম।অসহায় এতিমদের নামে উত্তোলন করা ১ টন চাউলের টাকা ইসলামী ফাউন্ডেশনের এক অসাধু কর্মকর্তা ও ৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বণ্টন করে দেয়। যা বৈধ কমিটি জানেই না । বৈধ কমিটি জানার পরে গাজীপুর ডিসি অফিস বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়।সরজমিনে এশিয়ান টেলিভিশনের একটি টিম ঘুরে দেখে এতিমখানায় তালা ঝুলছে । এতিমখানার ভিতরে ভাঙারি দোকানের মালামাল ইষ্টক করে রেখেছে ।এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন গাজীপুরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম বলেন, “আমাদের দায়িত্ব ছিল কেবল তথ্য প্রদান করা। বরাদ্দ, যাচাই-বাছাই ও বিতরণ সবকিছু করেছে ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা। আমাদেরকে একটি চিঠি দিয়েছিল শুধুমাত্র মাদ্রাসাগুলোর ফোন নাম্বার চেয়ে।”এদিকে দুর্যোগ ও ত্রান ব্যবস্থাপনা গাজীপুর শাখার কর্মকর্তা আউলাদ বলেন, "আমাদের পক্ষে প্রত্যেকটা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং এ তদন্ত করা সম্ভব নয় তাই আমরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে একটি চিঠি দেই এবং চিঠিতে সমস্ত বিষয়াদি উল্লেখ ছিলো, আমাদের কাছে তা সংরক্ষিত আছে। ইসলামিল ফাউন্ডেশনের তথ্য মোতাবেক আমরা ১৯৪টি এতিমখানায় এই অনুদান প্রদান করি।"এদিকে ত্রাণের চাল বেহাত হয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর মধ্যে দোষ চাপানো ও দায় এড়ানোর প্রবণতা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অসহায় এতিম ও আশ্রিতরা।এ বিষয়ে একটি স্বচ্ছ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। যাতে করে এই অসহায় এতিম দের আমানত খেয়ানত করতে সাহস না পায় কেউ।