বাংলাদেশে সেলসফোর্স’র ‘মিউলসফট কানেক্ট: এআই’
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বের শীর্ষ এআই কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম) সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সেলসফোর্স ঢাকায় তাদের ‘মিউলসফট কানেক্ট: এআই’ উদ্বোধন করেছে।সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে ওই অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা ও প্রযুক্তি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।কীভাবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের দিকে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে একটি শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে পারে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন পুরোনো সিস্টেমকে আধুনিক করে তুলছে, বিচ্ছিন্ন ডেটাকে একত্র করছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক উদ্ভাবন গ্রহণ করছে, মিউলসফটকে এই রূপান্তর প্রক্রিয়ার ডিজিটাল ভিত্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়।মিউলসফটের সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম, ইন্টিগ্রেশন, এন্ড-টু-এন্ড অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই) ম্যানেজমেন্ট, অটোমেশন এবং এআই-পরিচালিত কাজকর্ম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জটিলতা কমাতে, কাজের দক্ষতা এবং ব্যবসায়িক গতি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি এআই যুগেও ডিজিটাল যুগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজের যে পর্যায়েই থাকুক না কেন- সেটা পুরোনো সিস্টেম আপডেট, এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, কিংবা নতুন কোনো উদ্ভাবন-এই প্ল্যাটফর্ম তাদের সবরকমের প্রয়োজন মেটাতে তৈরি করা হয়েছে। গঠন যোগ্যতা, পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা, কার্যক্ষমতা এবং গভর্নেন্স মিউলসফটের এই সুবিধাগুলো ব্যবসায়িক রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। যা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত, নিশ্চিন্তভাবে এবং উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়িক সাফল্যসহ বিচ্ছিন্ন কাঠামো থেকে সংযুক্ত সিস্টেমে নিয়ে আসতে সাহায্য করে।মিউলসফট যা করতে পারে তার মধ্যে রয়েছে ইন্টিগ্রেশনের জন্য অ্যানিপয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম এবং এপিআই ম্যানেজমেন্ট, রোবোটিক প্রসেস অটোমেশন (আরপিএ), ইন্টেলিজেন্ট ডকুমেন্ট প্রসেসিং (আইডিপি), কম্পোজার এবং সেলসফোর্স ফ্লো। এই সবকিছু একসাথে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এআই-ভিত্তিক অ্যাপ তৈরি ও পরিচালনা করতে, লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) এপিআইগুলোকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা ও নিরাপদ রাখতে সহায়তা করে। পাশাপাশি এআই এজেন্টদের থার্ড পার্টি ডেটার ওপর কাজ করার সুযোগ করে দেয়, যা একটি এআই-নির্ভর প্রতিষ্ঠান তৈরির পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।এইগুলো নেওয়া হয়েছে বাস্তব জীবনের উদাহরণ ও গভীর বিশ্লেষণের মাধ্যমে, যে কীভাবে মিউলসফট ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ব্যবসাগুলোকে সহায়তা করে, যাতে তারা তাদের ব্যবসা, গ্রাহক এবং বাজারের পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারে।অনুষ্ঠানে কি-নোট উপস্থাপন করেন সেলসফোর্সের রিজিওনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মিউলসফট ইন্ডিয়ার কান্ট্রি হেড নেহাল মেহতা। তিনি বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের রূপান্তরের জন্য প্রস্তুতির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি নতুন ডিজিটাল যুগের দোরগোড়ায় যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশন আগামী দিনের ব্যবসার জন্য নতুন ধারা তৈরি করবে। যেহেতু আমরা একাধিক এজেন্টভিত্তিক যুগে প্রবেশ করছি, ইন্টিগ্রেশন এখন আর বিকল্প নয়—এটি হয়ে উঠেছে একটি মৌলিক ভিত্তি। যে সব প্রতিষ্ঠান তাদের সিস্টেম ও তথ্য সংযুক্ত করে এজেন্ট-প্রস্তুত প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলাকে অগ্রাধিকার দেবে, তারাই এআই-এর রূপান্তরমূলক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন করতে পারবে’।‘বাংলাদেশ সেলসফোর্সের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং আমরা এই অঞ্চলে কাজ করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ। মিউলসফট-এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিজিটাল রূপান্তরের ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই, যাতে তারা এআই ব্যবহার করে তাদের কর্মী, গ্রাহক ও অংশীদারদের দ্রুত উদ্ভাবনে এগিয়ে নিতে আরও নিরাপদ, বুদ্ধিদীপ্ত ও সহজে সম্প্রসারণযোগ্য সেবা দিতে পারে,’ বলেন নেহাল মেহতা।উৎপাদনশীলতা বাড়ানো থেকে শুরু করে নাগরিক ও গ্রাহকের অভিজ্ঞতা উন্নত করা এবং নতুন উদ্ভাবন চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সব খাতের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন এআই-কে তাদের প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে দেখছে। তবে এআই এর পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে তাদের দরকার একটি আধুনিক ও ভবিষ্যতের জন্য শক্ত ভিত্তি। মিউলসফট ঠিক সেই কাজটাই করে—এটি নির্ভরযোগ্য, এআই-চালিত ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতার জন্য ডিজিটাল মেরুদণ্ড হিসেবে।বাংলাদেশে সেলসফোর্স-এর এই ভিশনকে এগিয়ে নিচ্ছে একটি শক্তিশালী স্থানীয় পার্টনার নেটওয়ার্ক। যাদের আছে প্রয়োজনীয় কারিগরি দক্ষতা, সার্টিফিকেশন এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় সহায়তা করতে প্রস্তুত। এই পার্টনাররা দেশের ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপট ভালোভাবে বোঝেন, তাই তারা এআই-চালিত সল্যুশনগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী মানিয়ে নিতে পারেন।