• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ৪ঠা ভাদ্র ১৪৩২ দুপুর ১২:২৩:০৮ (19-Aug-2025)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় পরীক্ষা দিতে দিলেন না প্রধান শিক্ষক

১৯ আগস্ট ২০২৫ সকাল ০৯:৪৯:৩৬

সংবাদ ছবি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাইয়ে পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে মূল‌্যায়ন পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আর এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীর বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

১৮ আগস্ট সোমবার সকালে উপজেলার পুনটে অবস্থিত মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুল নামে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুরাইয়া মনি (৮) উপজেলার জালাইগাড়ী গ্রামে সাইফুল ইসলামের মেয়ে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটিতে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড থাকলেও স্ট্যান্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নাই। কোমলমতি শিশুদের উত্তপ্ত গরমে টিনের কক্ষে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আবার স্কুলে খোলা মাঠে গাছের নিচে ক্লাস করানো হচ্ছে। আবার স্কুলে কোচিং করানো নিষেধ থাকলেও করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কোচিং।

স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলে, সুরাইয়া মনি ক্লাসের মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে আসলে প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা দিতে না দেওয়ায় তখন স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে।

চতুর্থ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী নাহিদা আক্তার বলে, এ স্কুলে পড়ার জন্য প্রতিমাসে বেতন ৩০০ টাকা, কোচিং করার জন্য ৩০০ টাকা দিতে হয়। আর পরীক্ষা সময়ে পরীক্ষার ফি ১৮০ টাকা দিতে হয়।

শিক্ষার্থী সুরাইয়া মনি বলে, আমাকে হেড স্যার ট‌াকার জন‌্য পরীক্ষা দিতে দেননি। তিনি বলেন, তোর বাবা টাকা দিতে পারেনা, তোর পরীক্ষা দিতে হবে না। তুই বাড়ি যা বলে ঘাড় ধরে বের করে দেয়। এজন্য আমি স্কুলের মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমার সহপাঠীরা সবাই পরীক্ষা দিচ্ছিল। আমি পরীক্ষা না দিতে পারায় বের করলে দিলে বাহির দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলাম।

সুরাইয়া মনির বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। দিনমজুর দিয়ে সংসার চালাই। প্রতি মাসেই স্কুলে বেতন দেই। হয়তো এক-দুই দিন দেরি হয়। আমার মেয়ের কোন মাসের বেতন বকেয়া নেই। শুধু পরীক্ষার ফি বাকি ছিল। যেটা আমি আজকে দিতে গিয়ে দেখি আমার বাচ্চাকে রুম থেকে বের করে রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে রেখেছে। আর বাচ্চা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। এ দৃশ্য দেখার চেয়ে আমার মরণ ভালো ছিল।

এ বিষয়ে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষিক এমিলি ইয়াসমিন রিনা বলেন, আমি কোন কথা বলতে পারবো না। কি করতে পারেন, করেন।

কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। এসব প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি মালিকানাধীন। শুধু আমরা এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারি বই বিতরণ করা হয়ে থাকে।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, এবিষয়ে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর বাবা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ