• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ২৮শে ভাদ্র ১৪৩২ ভোর ০৪:১৪:১৭ (13-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:

মতামত

বার্ধক্যে সুস্থ জীবনধারার জন্য ফিজিওথেরাপি হোক নিত্যসঙ্গী

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ০৮:৪১:৫৫

সংবাদ ছবি

ডা. এম ইয়াছিন আলী: প্রতি বছর ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস। দিবসটির মূল লক্ষ্য- ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি, ফিজিওথেরাপিস্টদের ভূমিকা এবং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতায় এই চিকিৎসা পদ্ধতির ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা। এবারের প্রতিপাদ্য: ‘সুস্থ বার্ধক্যে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যকলাপের ভূমিকা : দুর্বলতা ও পড়ে যাওয়া প্রতিরোধ।’

বয়স বৃদ্ধি জীবনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও একইসঙ্গে দেহের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতায় নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। পেশিশক্তি হ্রাস পায়, হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়, ভারসাম্য বজায় রাখতে সমস্যা দেখা দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। গবেষণা বলছে, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে প্রতি তিনজনের একজন প্রতিবছর অন্তত একবার পড়ে যান। ফলে গুরুতর আঘাত বা স্থায়ী অক্ষমতার মতো জটিলতা দেখা দেয়। এতে শুধু দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় না, আত্মনির্ভরতার অভাব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকিও বাড়ে।

এ পরিস্থিতিতে ফিজিওথেরাপি শুধু পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নয়, বরং সুস্থ ও সক্রিয় বার্ধক্য নিশ্চিত করার একটি অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবা হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। নিয়মিত ফিজিওথেরাপি এবং উপযুক্ত শারীরিক অনুশীলনের মাধ্যমে পেশিশক্তি ও দেহের ভারসাম্য উন্নত করা যায়, পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়, হাড় ও অস্থিসন্ধির কার্যকারিতা বজায় থাকে এবং প্রবীণরা দৈনন্দিন কাজকর্মে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন। পাশাপাশি, ফিজিওথেরাপি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নেও সহায়ক। এটি মানসিক চাপ কমায়, হতাশা হ্রাস করে এবং প্রবীণদের সামাজিকভাবে আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে উৎসাহিত করে।

ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে যে উপকারগুলো পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে- শারীরিক শক্তি ও ভারসাম্য রক্ষা, অস্থি ও অস্থিসন্ধির স্বাস্থ্য রক্ষা, আত্মনির্ভরতা অর্জন, মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা। সুস্থ বার্ধক্য নিশ্চিত করতে ফিজিওথেরাপির পাশাপাশি নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ অপরিহার্য। হালকা হাঁটা, ভারসাম্য ও পেশিশক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম, যোগব্যায়াম বা নিঃশ্বাসের অনুশীলন প্রবীণদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। তবে প্রত্যেক ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ও সক্ষমতা ভিন্ন হওয়ায় অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম পরিকল্পনা গ্রহণ করা নিরাপদ ও কার্যকর পদ্ধতি।

দিবসটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রতিরোধই সর্বোত্তম চিকিৎসা। প্রতিদিনের জীবনে কিছু অভ্যাস, যেমন- নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতি যত্নবান হওয়া এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী শরীরচর্চা বৃদ্ধ বয়সেও সুস্থ ও সক্রিয় জীবনধারা বজায় রাখতে সাহায্য করে। প্রবীণরা সমাজের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও মূল্যবোধের ধারক। তারা সুস্থ থাকলে পারিবারিক ভারসাম্য রক্ষা, সমাজ ও জাতির জন্য শক্তিশালী ভিত্তি নির্মাণ হবে।

প্রবীণরা যদি নিয়মিত ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক অনুশীলনের সুযোগ পান, তারা সমাজে সক্রিয় ও গঠনমূলক নাগরিক হিসেবেও ভূমিকা রাখতে পারেন। ২০২৫ সালের বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবসের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত সময়োপযোগী। সবার উচিত, ফিজিওথেরাপিকে জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করা এবং এটি স্বাস্থ্যসেবার মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করা। নিয়মিত অনুশীলন ও সঠিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ করলে বার্ধক্যকালেও একজন মানুষ হতে পারেন সক্রিয়, আত্মবিশ্বাসী ও সুস্থ জীবনের অধিকারী।

লেখক: চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ

সংবাদ ছবি
বামনায় মরদেহ উদ্ধার, আটক ২
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাত ০৯:১৫:৫০



সংবাদ ছবি
রোমে গুলিবর্ষণে সাবেক বিএনপি নেতাসহ আহত ৩
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৬:৪৩

সংবাদ ছবি
সুন্দরবনে ৯ জেলে উদ্ধার, অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটক ২
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:২২:৫৪


সংবাদ ছবি
ভেদরগঞ্জে ভ্যান-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:১৯:৩০



সংবাদ ছবি
শান্তিনগরে মি. ডি আই ওয়াই’র পঞ্চম স্টোর উদ্বোধন
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৫:২০:১৪