আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবে উন্নত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির জন্য সবুজ সংকেত দেওয়ার কথা বলেছেন। আরব দেশগুলোতে অত্যাধুনিক অস্ত্র স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের নীতি থেকে এটি একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। খবর আল জাজিরার।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সফরের ঠিক একদিন আগে ১৭ নভেম্বর সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন।


রিয়াদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কের প্রশংসা করে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এফ-৩৫ বিক্রি করব... হ্যাঁ, আমি এটি করার পরিকল্পনা করছি। তারা এগুলো কিনতে চায়। তারা একটি দুর্দান্ত মিত্র।’
ট্রাম্প আব্রাহাম চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপনে সৌদি আরবকে রাজি করানোর জন্য কাজ করছেন। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত রিয়াদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য জয় হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে সৌদি কর্মকর্তারা বারবার আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি রাজ্যের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যা একটি কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শর্তে ইসরায়েলের স্বীকৃতির শর্ত দেয়।
ওয়াশিংটন এবং রিয়াদের মধ্যে সম্ভাব্য এই অস্ত্র চুক্তিটি ইসরায়েলের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যা মার্কিন আইনে অন্তর্ভুক্ত।
নীতিমালা লঙ্ঘন
সম্ভাব্য আঞ্চলিক প্রতিপক্ষের তুলনায় ইসরায়েলের উচ্চতর সামরিক ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য আমেরিকার কয়েক দশক ধরে প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ১৯৩৮ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত ও রোনাল্ড রিগ্যান কর্তৃক গৃহীত এই নীতিটি দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান অস্ত্র বিক্রিকে পরিচালিত করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের সমালোচকরা সতর্ক করেছেন যে, এই বিক্রয় এই অঞ্চলে দেশের দীর্ঘস্থায়ী সামরিক শ্রেষ্ঠত্বকে ক্ষুণ্ন করতে পারে। বিরোধী রাজনীতিবিদ ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক উপ-প্রধান ইয়ার গোলান বলেছেন, এই পদক্ষেপ ‘মধ্যপ্রাচ্যে একটি অস্ত্র প্রতিযোগিতা’ শুরু করার ঝুঁকি তৈরি করবে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরও বলেছেন, ইসরায়েলকে এই অঞ্চলে তার আকাশ শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে হবে।
এফ-৩৫ এর বিশেষত্ব
লকহিড মার্টিন দ্বারা নির্মিত এফ-৩৫ বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত যুদ্ধবিমান হিসাবে বিবেচিত হয়। এর প্রযুক্তি এমন যে শত্রু প্রতিরক্ষার জন্য এটি শনাক্ত করা কঠিন।
যদি এফ-৩৫ বিক্রি বাস্তবায়িত হয় তাহলে সৌদি আরব এফ-৩৫ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রথম আরব দেশ হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে আবুধাবি ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হওয়ার পর ট্রাম্প সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে এফ-৩৫ জেট বিক্রির অনুমোদন দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে ট্রাম্পের উত্তরসূরি জো বাইডেনের সময়ে প্রযুক্তির নিরাপত্তা নিয়ে মার্কিন আইন প্রণেতাদের উদ্বেগের কারণে সেই চুক্তি ভেস্তে যায়। মার্কিন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট কর্তৃক অনুমোদিত অস্ত্র বিক্রি বাতিল করতে পারে।
সোমবার রিয়াদের সঙ্গে সম্ভাব্য এফ-৩৫ চুক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প জুনে ইরানের ওপর মার্কিন হামলার কথা উল্লেখ করেন, যা দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available