নিজস্ব প্রতিবেদক: শনিবার রাত সোয়া ১০টায় প্রয়াত হন দেশের কিংবদন্তী লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। ১৪ সেপ্টেম্বর রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
বৃষ্টির কারণে কিছুটা সময় বিলম্ব করে দুপুর ১২টার পর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয় শিল্পীর মরদেহ। এদিন মুষলধারে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছুটে আসেন অগুণতি মানুষ।
শ্রদ্ধা জানাতে এসে গীতিকার ও নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, ফরিদা পারভীন একজন শিল্পীর চেয়েও বড় কিছু। বিশেষ করে লালনগীতিতে উনি যে অবদান রেখেছেন তা অবিস্মরণীয়। লালনের গানের যে আবেদন তার কণ্ঠে ফুঁটে উঠেছে, তার মতো করে কেউ পারেনি। তার প্রয়াণে আমাদের মিউজিক ইন্ডিস্ট্রের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। তার মতো শিল্পী পেতে কত দশক লাগবে জানি না। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
নির্মাতা কামার আহমেদ সাইমন বলেন, গান-বাজনা যে সাধনার ব্যাপার না, সেখানে একেকজন পাহাড়সম মানুষ চলে যাচ্ছে। উনারা হওয়ার পেছনে যে ৫০ বছরের সাধনার ব্যাপারটা সেই যাত্রা থেকে আমরা বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছি। একজন ফরিদা পারভীন চলে যাওয়া মানে একজন মানুষ চলে যাওয়া নয়, একটা সময় চলে যাওয়া। কারণ ফরিদা পারভীন আরেকটা হবে না।
কণ্ঠশিল্পী বিউটি বলেন, ফরিদা পারভীন ম্যাম চলে গেছেন, আল্লাহ তা'আলা যেন জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান দান করেন। তার চলে যাওয়ায় যে অপূরণীয় ক্ষতি আমাদের হয়ে গেল লালন সংগীতে তার যে ভক্তরা রয়েছে তারা রন্ধ্রে রন্ধ্রে বুঝতে পারছে।
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয় তার নামাজে জানাজা।
এরপর কুষ্টিয়ায় নেওয়া হবে ফরিদা পারভীনের মরদেহ। সেখানে আরেক দফা জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে কুষ্টিয়া পৌর কবরস্থানে।
ফরিদা পারভীন বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। কিডনি ডায়ালাইসিস চলছিল সপ্তাহে দুদিন করে। তবে মাঝেমধ্যে অবস্থার অবনতি হত তার। চলতি বছরে তিন দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে।
সর্বশেষ গেল ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ফরিদা পারভীনকে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়ার পরই নিয়ে যাওয়া হয় আইসিইউতে। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়। সেখান থেকে আর ফেরানো গেল না তাকে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available