আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী মর্জিনা বেগম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইউনিট।

২৬ নভেম্বর আখাউড়া থানায় দায়ের করা মামলা নং-২৩ (ধারা ৩০২/৩৪)–এর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পিবিআই।


মামলার বাদী রহিমা আক্তার জানান, তাঁর মা মর্জিনা বেগম (৪৫) আখাউড়া সড়কবাজারে শ্রমিক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন এবং সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি করতেন। অন্ধ স্বামীকে নিয়ে তিনি দেবগ্রামের নয়াবাজার এলাকায় বাস করতেন।
২৫ নভেম্বর ভোররাত ৩টার দিকে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন পেয়ে বাসা থেকে বের হন মর্জিনা বেগম। পরদিন সকালেও তিনি বাসায় না ফেরায় সন্ধ্যায় সবজি আড়ত থেকে খবর পান পৌরসভার পুরোনো ভবনের পাশে এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি মায়ের মরদেহ শনাক্ত করেন। গলায় আঘাতের চিহ্ন ও শরীরে ময়লার দাগ ছিল।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোস্তফা কামালের নির্দেশনায় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইনচার্জ পুলিশ সুপার শচীন চাকমার তত্ত্বাবধানে তদন্ত পরিচালনা করেন এসআই (নিঃ) মো. আল-আমিন।
সিসিটিভি ফুটেজ, প্রযুক্তিগত তথ্য ও মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানে জানা যায়—কাঁচাবাজারের দারোয়ান শহিদুল ইসলাম (৪৩) নিজের মোবাইল ফোন থেকে ‘মালের গাড়ি এসেছে’ বলে মর্জিনাকে ডেকে নেন। ফোন করার মাত্র ১৪ মিনিট পর রাত ৩টা ১৮ মিনিটে তাকে কাঁচাবাজার এলাকায় যেতে দেখা যায়।
তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে, ঘটনাস্থলে শহিদুল প্রথমে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। এরপর তার সহযোগী হোসেন ওরফে শফিক (৪০) এবং রুমান মিয়া (২৪) ধর্ষণের চেষ্টা করলে মর্জিনা বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনজন মিলে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
হোসেন ভুক্তভোগীর গলা চেপে ধরে, শহিদুল দুই হাত চেপে রাখে এবং রুমান দুই পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁরা মরদেহ ফেলে দ্রুত সরে যায়।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ২৬ নভেম্বর দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে কাঁচাবাজার এলাকা থেকে শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পিবিআই। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে আখাউড়ার মসজিদপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে হোসেন ও রুমানকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং স্বেচ্ছায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পিবিআই জানায়, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available