• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ১৭ই ভাদ্র ১৪৩২ দুপুর ০২:০২:৪৪ (01-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:

অপরাধ

ফরিদপুরে ভূমি অফিসে প্রকাশ্যেই চলে ঘুষ লেনদেন, ভিডিও ভাইরাল

১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ১১:৫৮:০৯

সংবাদ ছবি

সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুর জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দলিল রেজিস্ট্রি, জেলা ও উপাজেলা পর্যায়ের জমির নকলসহ রেকর্ড রুম থেকে কাগজ পেতে হলে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না এমন অভিযোগ সেবাগ্রহীতাদের। এছাড়া অনিয়ম দুর্নীতি করে ভুয়া দলিল তৈরি করার অভিযোগও আছে রেকর্ড হেফাজতখানার কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ঘুষ গ্রহণের ভিডিও দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তারা।

১২ সেকেন্ডের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফরিদপুর রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের রেকর্ড রক্ষক মো. মাসুদ আলী মোল্লার টেবিলের সামনে বসা এক ব্যক্তির নিকট থেকে ঘুষ গ্রহণ করে খুশি মনেই প্যান্টের পকেটে রাখছেন। ভিডিওতে শোনা যায়, আগে দুই হাজার দিছি, এখানে দুই হাজার আছে গুনে নেন; গোনা লাগবে না বলে হাসি মুখে রেখে দেন মাসুদ আলী মোল্লা। বলেন, আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, যেভাবে সুন্দর হয় আমি সুন্দর করে কাজ করে দিব।  

গোপনে ভিডিও ধারণকারী জেলার ভাঙ্গা পৌর এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান শেখ বলেন, জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে একটি জমির নকল উঠাতে দিনের পর দিন ঘুরার পর টাকা দিয়ে নকল উঠাতে বাধ্য হয়েছি। কয়েক দফায় টাকা দেওয়ার পরও নকল উঠানো নিয়ে ঘুরাতে থাকে রেকর্ড পিকার মাসুদ মোল্লা।  

ফরিদপুর জেলা ও সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের জমি রেজিস্ট্রি, মূল দলিল উত্তোলন, বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলার বহু পুরাতন দলিলের নকলসহ যেকোন সম্পত্তি হস্তান্তরের সব তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হয় এই অফিস থেকে। যেকারণে এসকল কাজে বহু মানুষ এই কার্যালয়ের স্মরণাপন্ন হয়ে থাকে। সেই সুযোগে নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছে এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শরিয়তপুর জেলার জাজিরা এলাকা থেকে আসা ভুক্তভোগী মো. রাজিব মিয়া বলেন, ‘১৯৭৬ সালের দলিল মূলে ক্রয় করা জমি আরএসসহ ভোগ দখলে রয়েছি। জামাল নামের একব্যক্তি ফরিদপুর রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের রেকর্ড রক্ষক মো. মাসুদ আলী মোল্লার সাহায্যে ১৯৬৮ সালের একটি ভুয়া দলিলের নকল তৈরি করে আমাদেরকে হয়রানি করছে। রেকর্ড রুমে তালালি দিলে ভলিয়ম বুকে ১৯৬৮ সালের দলিলের কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। ওই ভুয়া দলিলের কারণে প্রকৃত জমির মালিক হয়েও দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।’

গত ২৭ আগস্ট ফদিরপুরে দুর্নীতি দমন কার্যালয়ে মো. রাজিব বাদী হয়ে রেকর্ড কিপার মো. মাসুদ আলী মোল্লার এই দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে ভিডিওতে দেখা প্রকাশ্যে টাকা নেয়ার বিষয় অস্বীকার করে রেকর্ড রক্ষক মো. মাসুদ আলী মোল্লা বলেন, ‘আমার হাতের মধ্যে জোর করে টাকা দিয়ে গেছে ওই ব্যক্তি। তিনি তার মতো করে একটি রিপোর্ট করে দিতে বলছেন, কিন্তু আমি কাগজপত্র যাচাই করে দিব বলেছি।’

ফেসবুকে আসা ভিডিওতে রেকর্ড কিপার মাসুদের টাকা নেওয়ার দৃশ্য দেখে তিন কার্যদিবসের ভিতর ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন ফরিদপুর সদর সাব রেজিস্ট্রার মিনতী দাস। দোষী সাবস্ত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তিনি।

ফরিদপুর জেলা রেজিস্ট্রার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভূয়া সনদ দিয়ে রেকর্ড কিপার বা নকল নবীশের চাকরি প্রাপ্তির বিষয়সহ প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ফরিদপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রফেসর সুলতান মাহমুদ হীরক বলেন, ‘জেলার নয়টি উপজেলাসহ ৮১টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে ভূমি সংক্রান্ত বহু সেবা নিতে আসা সাধারণ নাগরিক দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত সেবা পাবে, এমনটিই প্রত্যাশা করি।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ





সংবাদ ছবি
রাঙ্গুনিয়ায় ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দুপুর ১২:৩২:০৪

সংবাদ ছবি
চট্টগ্রামে নকল বিড়ি জব্দ
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দুপুর ১২:২৫:০৯