• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১৭ই কার্তিক ১৪৩২ বিকাল ০৫:০৮:৫৯ (01-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:

ফাজিল পাসের আগেই নিয়োগ পান স্বামী, বিএড সনদ জাল স্ত্রীর

১ নভেম্বর ২০২৫ সকাল ১১:৩৫:৪২

সংবাদ ছবি

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আঁওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। ফাজিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েই দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন মোস্তফা কামাল নামের এক ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী উম্মে কুলছুম আক্তারও জাল বিএড সনদ ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Ad

এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে আঁওড়া গ্রামের বাসিন্দা মোজাহেদ হোসেন মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

Ad
Ad

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আঁওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) মো. মোস্তফা কামাল ১৯৯৮ সালে হাতিয়ার কামিল মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পরীক্ষায় অংশ নেন। ঐ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয় ১৯৯৮ সালের ১ নভেম্বর। অথচ তিনি একই বছরের ৮ জুলাই, অর্থাৎ ফলাফল ঘোষণার প্রায় পাঁচ মাস আগেই সহকারী শিক্ষক (ধর্ম) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০০১ সালের জুনে তিনি এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারের সকল সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেন এবং আজও সেই পদে বহাল আছেন।

অন্যদিকে, তার স্ত্রী মোছা. উম্মে কুলছুম আক্তার ২০০২ সালের ২৪ মে সহকারী শিক্ষক (জীববিজ্ঞান) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে ২০২১ সালে স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে তিনি জীববিজ্ঞান পদ থেকে অনুমোদন ছাড়াই ভৌতবিজ্ঞান পদে এমপিওভুক্ত হন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এ পরিবর্তন করা হয়। তদন্তে জানা যায়, তিনি একটি স্থানীয় কম্পিউটার দোকান থেকে বেসরকারি রয়েল ইউনিভার্সিটির নামে জাল বিএড সনদ ক্রয় করেন। সেই সনদের ভিত্তিতে তিনি বিএড স্কেলভুক্ত হয়ে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।

একই বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী আফজাল হোসেনও জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই নিজেই থুপসাড়া সেলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার নামে অষ্টম শ্রেণী পাসের ভুয়া সনদ প্রস্তুত করে ১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর বিদ্যালয়টিতে নৈশ্য প্রহরী পদে যোগ দেন। ২০২১ সাল থেকে তিনি এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারি অর্থ গ্রহণ করছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মস্তফা খান বলেন, ধর্মীয় শিক্ষক মোস্তফা কামালের নিয়োগের প্রায় ১৫ দিন আগে আমি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিই। তখন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা আমার কাছ থেকে কিছু কাগজে স্বাক্ষর নেন। নতুন থাকায় বিষয়টি বুঝে উঠতে পারিনি। পরে জানতে পারি, পাসের আগেই নিয়োগ, জাল বিএড সনদে বেতন ভোগ এবং জীববিজ্ঞান পদে নিয়োগ নিয়ে ভৌতবিজ্ঞান পদে এমপিওভুক্ত হওয়ার মতো অনিয়ম হয়েছে। এমনকি নৈশ্য প্রহরীও কোথাও না পড়ে সনদ তৈরি করে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ আছে। এসব বিষয়ে আমার আগে জানা ছিল না। পরে স্থানীয় একজন অভিযোগ করলে জেলা শিক্ষা অফিস কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেয়, আমি তাদের বিষয়টি অবহিত করেছি।

অভিযোগকারী মোজাহেদ হোসেন বলেন, ধর্মীয় শিক্ষক মোস্তফা কামাল ও তার স্ত্রী উম্মে কুলছুম আক্তার এবং নৈশ্য প্রহরী আফজাল হোসেনের চাকরির বিষয়ে আমি আগে থেকেই জানি। কিন্তু প্রমাণ হিসেবে কাগজপত্র হাতে না পাওয়ায় এতদিন অভিযোগ করতে পারিনি। তারা তিনজনেই অবৈধভাবে নিয়োগ নিয়ে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। তাদের ন্যায্য বিচার হওয়া দরকার।

অভিযুক্ত শিক্ষক মোস্তফা কামালের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনেই কথা না বলে ফোন কেটে দেন। পরে তার স্ত্রী, অভিযুক্ত জীববিজ্ঞানের শিক্ষক উম্মে কুলছুম আক্তার বলেন, মোবাইলে এসব বিষয়ে কথা বলা যাবে না। অন্যদিকে নৈশ্য প্রহরী আফজাল হোসেনের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে থুপসাড়া সেলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মতিয়র রহমান জানান, তার প্রতিষ্ঠানে আফজাল হোসেন নামে কোনো শিক্ষার্থী কখনো ছিল না মর্মে তিনি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন অভিযোগ পাওয়া বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর তাদের নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র চেয়ে প্রধান শিক্ষককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সনদ অর্জনের আগে চাকরি পাওয়া এবং জাল সনদে এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তে এসব অভিযোগ প্রমাণ হলে একজনেরও চাকরি থাকবে না। এছাড়া সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হবে।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ


সংবাদ ছবি
৭১ আমাদের জন্মের ঠিকানা : মির্জা ফখরুল
১ নভেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৪:৫৩:১৩






সংবাদ ছবি
বিএনপি গণভোট মানবে না: ব্যারিস্টার খোকন
১ নভেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৩:৫১:৩৯




Follow Us