কুমিল্লা প্রতিনিধি: সড়ক দুর্ঘটনার অভিশাপ থেকে মুক্তি কবে— এই প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের ইউটার্নে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর। একসাথে খোঁড়া হয়েছে চারটি কবর। প্রাণ গেলো এক পরিবারের বাবা, মা এবং দুই সন্তানের।
কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের এই পরিবারটি মুহূর্তেই নাই হয়ে গেল। নিহতরা হলেন— আলহাজ্ব ওমর আলী (৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬৫), বড় ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল হাসেম স্বপন (৫০) এবং ছোট ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল কাশেম মামুন (৪৫)।
২২ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার হোটেল নূরজাহান এলাকার ইউটার্নে কাভার্ডভ্যান উল্টে প্রাইভেটকারের ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসার জন্য মাস দুয়েক আগে ওমর আলী স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বড় ছেলে আবুল হাসেম স্বপনের বাসায় যান। চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তারা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন দুই ছেলেকে নিয়ে। কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় শেষ হয়ে যায় চারজনের জীবন।
নিহত আবুল হাসেম স্বপন রাজধানীর কল্যাণপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ব্যাংক এশিয়ার মিরপুর রূপনগর শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঢাকাতেই থাকতেন স্বপন। তার মেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে, ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।
অপর নিহত আবুল কাশেম মামুন রাজধানীর মানিকগর এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি এমএনজি নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দুই ছেলের জনক ছিলেন মামুন। বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, ছোট ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।
এছাড়া নিহত ওমর আলীর বড় মেয়ে হাসিনা আক্তার যমুনা ব্যাংকের দোলাইখাল শাখায় কর্মরত। ছোট মেয়ে রোকসানা আক্তার বিথি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় চাকরি করেন।
শুক্রবার রাতেই জানাজা শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে দুই ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে পাশাপাশি সমাহিত করা হয়েছে। পুরো গ্রাম এখনো শোকে স্তব্ধ, আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
সকলের একটাই প্রশ্ন,আর কত প্রাণ ঝরলে আমরা নিরাপদ সড়ক পাবো?
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available