বাতেন বিপ্লব: রাজি না থাকলে মেয়েদের জোর করা হতো। চলতো মানসিক নির্যাতন। মেস থেকে শুরু করে ক্যাম্পাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন; সবখানেই ইভটিজিং করা হতো টার্গেট করা মেয়েদের। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাতে একেকটি মেয়ে পাশবিক লালসার নিরীহ শিকারে পরিণত হওয়ার ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত। এমন চাপা বিভিষীকাময় পরিবেশের মধ্যে মুখে কুলুপ এটে বসে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ভীতিকর এই পরিস্থিতির মধ্যে ফাইরুজ অবন্তিকার জীবন দিয়ে প্রতিবাদ এবং উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকেই দৃষ্টি সারা দেশের মানুষের। যেখানে একের পর এক উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। অবন্তিকার ফেসবুক প্রফাইলে অভিযোগের পাহাড় জমা পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। একটি চিরকুট। জীবনের বিণিময়ে শত সহস্র শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রত্যয়। সবকিছুতে তালগোল পেকে গেছে জগা বাবুর পাঠশালায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, প্রক্টরিয়াল বডি এবং সহপাঠীদের কাছেই যৌন হয়রানির শিকার হওয়া শিক্ষার্থী মরে বেঁচে ঘুরে দাঁড়ানোর বহু চেষ্টা চালিয়েছে তার প্রমাণও মিলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট ও রিলসে।
শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে যে চাপা ক্ষোভে ভুগছিলেন, তার বহি:প্রকাশ ঘটতে শুরু করেছে। ক্যাম্পাসে, রাজপথে আগুন জ্বলছে। ক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠছে ডিজিটাল দুনিয়ায়।
অথচ কদিন আগেও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন শাখাওয়াতকে বাঁচাতে তাসরিফের কুড়েঘরকে নিয়ে কনসার্টের আয়োজন হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সেখানেও মোটিভেশনাল স্পিস দিয়েছিলো ফাইরুজ অবন্তিকা। নেট দুনিয়ায় আমার কোন বন্ধু নাই বলা মেয়েটি। বাস্তব জীবনে সিনিয়র জুনিয়র অনেকেরই খোঁজ খবর নিতো প্রতিনিয়ত। কারো কাছে সেটি বন্ধুর চেয়েও বেশি। অবন্তিকাকে নিয়ে তারই ফেসবুক ওয়ালে যোগ বন্ধুদের প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অরক্ষিত চুনকাম খসে পড়া জীর্ণ দেয়াল ভেঙে নতুন করে শিকল ভাঙার আওয়াজ তুলবে। কিন্তু অলক্ষে যত অবন্তিকা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে তার জবাব হয়তো জীর্নতার আবরণে ঢেকে রবে অনন্তকাল।
লেখক: চিফ রিপোর্টার, এশিয়ান টেলিভিশন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available