নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা রুজু হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
৮ আগস্ট শুক্রবার বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন খান জানান, নিহত তুহিনের বড় ভাই মো. সেলিম ও আরেকজন বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছেন। আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে যাচাই চলছে। তাদের সম্পৃক্ততা মিললে গ্রেফতার দেখানো হবে।
নিহত তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে তুহিন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চান্দনা চৌরাস্তা মসজিদ মার্কেট এলাকায় এক নারীকে কেন্দ্র করে বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে কয়েকজন সশস্ত্র যুবকের মারামারি হয়। এ সময় তুহিন ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া করে চায়ের দোকান থেকে টেনে এনে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রবিউল ইসলাম জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজন নারীকে কেন্দ্র করে বাদশা মিয়াকে আক্রমণ করা হয়। তুহিন ভিডিও ধারণ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কয়েকজন সন্ত্রাসীকে শনাক্ত করা হয়েছে, গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বলেন, আমার ভাইকে কেন হত্যা করা হলো? তার স্ত্রী ও দুই ছেলে এখন অভিভাবকহীন। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি চাই।
ঘটনার পর স্থানীয়রা বিক্ষোভ করেছেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার তাহেরুল হক চৌহান বলেন, ‘ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় একাধিক দল মাঠে আছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার সম্ভব হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী, সিসিটিভি ফুটেজ এবং পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার সঙ্গে চাঁদাবাজির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং কল গার্ল দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের একটি চক্রের ধারালো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দ্বারা এক ব্যক্তিকে আঘাত ও ধাওয়া করার ঘটনা সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তার মোবাইল ফোন দিয়ে রেকর্ড করার কারণে ওই অস্ত্রধারীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ছাড়া নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ঘটনার দিন তিনি চাঁদাবাজি সংক্রান্ত কোনো রিপোর্ট এবং ভিডিও পাবলিশ করেননি।
প্রসঙ্গত, ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকার মসজিদ মার্কেটের সামনে আসাদুজ্জামান তুহিন নামে এক সংবাদকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available