• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০৩:৫৭:৪৬ (27-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০৩:৫৭:৪৬ (27-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ ৪১.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, তীব্র পানি সংকট

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় আজ সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ও ২০ এপ্রিল শনিবার তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল। সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এ যাবৎকালের এটাই সর্বোচ্চ তীব্র তাপপ্রবাহের রেকর্ড হয়েছে।সারাদেশের কয়েকটি অঞ্চলের মধ্যে কুষ্টিয়াতেও চলছে টানা ১০ দিন ধরে তীব্র তাপ প্রদাহ। অতি তাপমাত্রায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন সব শ্রেণির মানুষ, বিশেষ করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সাথে জমিতে সেচ দিতে গিয়ে চরম অসুবিধায় পড়ছেন কৃষকরা। এ জেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ৩৪ ফুট নিচে নেমে গেছে। টানা তীব্র তাপপ্রবাহে জেলার ৬ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। পুরো জেলা জুড়ে পানিসংকট দেখা গেছে।কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় শুক্রবার ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি, বুধবার ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি, সোমবার ৪০ ডিগ্রি, রোববার ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও শনিবার ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন আর রশিদ জানান, ২৬ এপ্রিল বেলা ৩টায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি কুষ্টিয়ার এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।তিনি বলেন, এর আগে এই জেলার তাপমাত্রার রেকর্ড সংরক্ষণ করা নাই। ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল এখানে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এটিই ছিল কুষ্টিয়া জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।মামুন আর রশিদ বলেন, এপ্রিলের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যে টানা তাপপ্রবাহ চলছে সময়ের বিবেচনায় এত দীর্ঘ তাপ প্রবাহ তিনি এর আগে কখনো দেখেননি। গত বছরেও দেখা গেছে ৩ থেকে ৪ দিন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে থেকে আবার নিচে নেমে আসে। তবে এবার গত ১০ দিন ধরে টানা চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রির ওপরে)। আগামী কয়েকদিনেও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে থাকবে বলে পূর্বাভাস জানিয়েছেন তিনি।এদিকে কুষ্টিয়ায় ভূগর্ভস্থ পানিরস্তর ৩৪ ফুট নিচে নেমে গেছে। টানা তীব্র তাপপ্রবাহে জেলার ৬ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। নদী ও খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। ফলে মানুষের মধ্যে তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গত একমাস ধরে পানির সংকটে কষ্ট করেছেন জেলার লাখো মানুষ। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তীব্র তাপপ্রবাহ, দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলোও ক্রমেই শূন্য হয়ে পড়ছে। এছাড়াও অপরিকল্পিত গভীর নলকূপ ও অসংখ্য সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনের কারণে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরও নিচে নেমে গেছে। ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে পদ্মা নদী শুকিয়ে গেছে। যার ফলে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ খালেও পানি নেই। এ ছাড়া গড়াই, কালী নদীসহ অন্যান্য নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে অগভীর টিউবওয়েলে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। একদিকে পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানির যেমন সংকট দেখা দিয়েছে একইসঙ্গে কৃষি জমিতে সেচ দেওয়ার জন্যও পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত পানি। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই পানির স্তর নিচে নামতে শুরু করেছে। বর্তমানে ভূগর্ভস্থ পানিরস্তর ৩৪ ফুট নিচে নেমে গেছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির পাশাপাশি কৃষি জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকার মাঠের সেচে পানি উঠছে না। ফলে বোরো ধানের জমিতে সেচ নিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে কৃষকরা। স্থানীয়রা বলছেন, কালবৈশাখীর মৌসুমেও প্রায় এক মাস বৃষ্টির দেখা নেই।নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে গেছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না অগভীর নলকূপ ও সেচ পাম্পে। তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। পেটের দায়ে যারা কাজ করতে বের হচ্ছেন, তারা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।এছাড়া তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে এবং বৃষ্টির প্রত্যাশায় প্রায় প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।