• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ৩রা ভাদ্র ১৪৩২ রাত ১০:৪৮:৫৪ (18-Aug-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

নওগাঁর আত্রাইয়ে স্কুল আছে রাস্তা নেই ভোগান্তিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ: ন‌ওগাঁর আত্রাইয়ে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থী, অবকাঠামো, খেলার মাঠ, এরিয়া প্রাচীর এবং মেনগেট থাকলেও স্কুলে যাতায়াতের জন্য নেই কোনো রাস্তা। স্কুলের চারপাশে ব্যাক্তি মালিকানা জমি থাকায় শিক্ষার্থীদের কখনো মানুষের বাড়ির উঠান দিয়ে, কখনো বাগান দিয়ে আবার কখনো বা পানি ডেঙিয়ে স্কুলে যেতে হয়। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির পড়েছে‌। বর্ষা মৌসুমে এই ভোগান্তি আরো চরম পর্যায়ে উঠে।বলছিলাম উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়ন কোলা মধ্য বোয়ালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা। বিদ্যালয় সূত্রে জানাযায় ১৮৭০ সালে ‌এই স্কুলটি প্রতিষ্টিত হয়। বর্তমান স্কুলে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৯০ জন‌। এবং প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক রয়েছে পাঁচ জন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল ভবন থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে সরকারি সড়ক রয়েছে। এই দূরত্বের মাঝে কিছু ব্যাক্তি মালিকানা ও কিছু সরকারি খাস জমি রয়েছে। এবং স্কুলের প্রধান গেটের সামনে রয়েছে পানিতে ভরপুর এক ডোবা। মালিকানা এবং খাস জমিতে বাঁশের বেড়া দিয়েছে মালিকপক্ষ। যার কারণে স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তাই শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে অন্যের জমির উপর দিয়েই স্কুলে যাতায়াত করছেন। এবং বর্ষাকাল এলেই পানিতে ভিজে ছাড়া কোনোভাবেই স্কুলে যাওয়া সম্ভব নয়।স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আছিয়া সুলতান বলেন, আমাদের স্কুলে আসার জন্য কোন রাস্তা নেই। আমরা অন্যের বাড়ির উপর দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করি। একটু বেশি বৃষ্টি হলে স্কুল গেটে পানিতে ডুবে যায় আমাদের পানিতে ভিজে স্কুলে আসতে হয়। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাসমিম বলেন,রাস্তা না থাকায় স্কুলে আসতে আমার ভালো লাগেনা। অন্যের বাড়ির উপর দিয়ে স্কুলে আসতে গেলে অনেকেই অনেক রকম কথা বলে।শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলেন,এখন আমাদের বাচ্চারা অনেক ছোট,তাই তাদের সাথে আমাদের স্কুলে আসতে হয়। কিন্তু এই স্কুলে আসার কোন‌ রাস্তা নেই। আগে স্কুল অনেক কম ছিল,এখন অনেক স্কুল হয়েছে। এভাবে থাকলে আমাদের বাচ্চাকে অন্য স্কুলে ভর্তি করাবো।কোলা গ্রামের কায়মদ্দীর ছেলে আকরাম বলেন, স্কুলে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। কেউ কোন রাস্তা দিতে চায় না। মোশারফের পুকুর পাড় দিয়ে কোন ভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে যায়। এখন বন্যার সময় সে রাস্তাও ডুবে গেছে। এখন সেই দিক দিয়েও আর স্কুলে যেতে পারবেনা। বাধ্য হয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা মানুষের বাড়ির উপর দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। রাস্তা থেকে স্কুলের প্রধান গেট সোজাসুজি কিছু খাস এবং কিছু মালিকানা সম্পদ রয়েছে। তারা তাদের সম্পত্তিতে বেড়া দিয়ে পথ আটকে রেখেছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুলে যাতায়াতের জন্য রাস্তাটা খুবই জরুরি। আশা করি স্কুল কর্তৃপক্ষ এই রাস্তার খুব দ্রুতই ব্যবস্থা করবে।এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাফিজা আক্তার বলেন,আমার বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় আমরা বিপদে আছি।  এ বিষয়ে আমি আমাদের ঊর্ধ্বতনদের অবহিত করেছি। আশা করছি তাড়াতাড়ি একটা সমাধান আসবে।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাযহারুল ইসলাম বলেন,বিদ্যালয় সামনে যেহেতু খাস সম্পত্তি রয়েছে এ সম্পত্তির মালিকানা এসিল্যান্ড বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সেই খাস সম্পত্তি যদি ফ্রি করে দেয় তাহলে স্কুলের বাচ্চাদের জন্য যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করা যায়। এবং রাস্তার একটি স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব।আত্রাইয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাণীনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, আমি সেখানে আমার সার্ভেয়ার এবং তহশিলদার পাঠাচ্ছি। তারা দেখে আসার পর প্রয়োজন হলে আমি সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় অবস্থা গ্রহণ করব।