বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কৃষি সম্পর্ক বড় অর্জন: প্রেস সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অর্থনীতি ও ফার্ম লবির সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপনকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির একটি বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।৯ নভেম্বর রবিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, গত ১৫ মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কৃষি সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দূরদর্শী নেতৃত্বে এ অগ্রযাত্রার সূচনা করেন ড. খলিলুর রহমান। প্রথমে রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই কূটনীতিক পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান। গত ফেব্রুয়ারিতে ড. ইউনূস তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ওয়াশিংটন পাঠান।জাতিসংঘে বাণিজ্যনীতিবিষয়ক সংস্থায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকা ড. খলিল দ্রুতই মার্কিন কৃষি অর্থনীতি ও ফার্ম লবির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলেন বলে উল্লেখ করেন প্রেস সচিব।তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ যেমন কৃষিপণ্যের বড় আমদানিকারক, তেমনি যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশ—বিশেষ করে সয়াবিন, গম, তুলা ও ভুট্টার ক্ষেত্রে। মার্কিন কৃষিপণ্যে প্রবেশাধিকার বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আমদানির উৎসে বৈচিত্র্য আনবে।শফিকুল আলম জানান, ড. খলিলের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের আমদানিকারক ও মার্কিন ফার্ম লবির মধ্যে একটি শক্তিশালী সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে, যা সাম্প্রতিক শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার নেতৃত্বে আলোচনায় বাংলাদেশ এমন প্রতিযোগিতামূলক শুল্কহার অর্জন করেছে, যা দেশের পোশাক শিল্পকে কার্যকরভাবে সুরক্ষা দিয়েছে।প্রেস সচিব আরও জানান, এই সপ্তাহেই বাংলাদেশের আমদানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি কৃষিপণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটি দুই দেশের জন্যই লাভজনক চুক্তি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক ঐতিহাসিক মাইলফলক।তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে চীন ব্রাজিল থেকে অধিকাংশ সয়াবিন আমদানি করে, ফলে বাংলাদেশ এখন মার্কিন কৃষিপণ্যের নতুন সম্ভাবনাময় বাজার হতে পারে।শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান কৃষি-বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন দুই দেশের কূটনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং আরও অনুকূল শুল্কহার নিয়ে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করবে।তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, একবার বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে লবিস্টের পরিবর্তে মার্কিন ফার্ম লবিই তখন বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করবে।স্ট্যাটাসে তিনি আরও লেখেন, জাপান, চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ও পশ্চিম ইউরোপ যেমন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে, বাংলাদেশও এখন সেই পথে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যেই সেই নতুন অধ্যায়ের ভিত্তি স্থাপন করেছে।