ধূমপানজনিত ক্ষতি হ্রাসে ধূমপানের বিকল্প পণ্যের ওপর গুরুত্বারোপ
লাইফস্টাইল ডেস্ক: এতদিন পর্যন্ত ধূমপানের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ধূমপান নিরুৎসাহিত করাকে একমাত্র উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হত। তবে, বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীরা, ধূমপানের ক্ষতি হ্রাসে কার্যকর বিকল্প গ্রহণ করতে পারেন।বিশ্ব ভেইপ দিবস উপলক্ষে ‘ধূমপানমুক্ত বিশ্ব গড়ার’ যাত্রাকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে অংশীদারদের একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো (বিএটি)।বর্তমানে, ভেইপ, হিটেড প্রোডাক্টস ও নিকোটিন পাউচের মতো নানা ধরনের বিকল্প পণ্য রয়েছে, যেগুলোতে সিগারেটের তুলনায় অনেক কম ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে। জাপান, নিউজিল্যান্ড, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো যেসব দেশ এসব পণ্য সহজলভ্য করেছে সেখানে ধূমপানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।সুইডেনের পরিসংখ্যানের (দীর্ঘমেয়াদি) তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ‘টোব্যাকো হার্ম রিডাকশন’ কৌশল কার্যকর হয়েছে। গত ৩০ বছরে দেশটির বহু মানুষ ধূমপান ছেড়ে ‘স্নাস’ নামক ঐতিহ্যবাহী মুখে ব্যবহৃত তামাকজাত পণ্য ব্যবহার শুরু করেছেন।সম্প্রতি, দেশটিতে ধূমাপানের বিকল্প অনেক পণ্য প্রচলন হয়েছে, যা সিগারেটের চেয়ে সাশ্রয়ী; কেননা, স্বাস্থ্যঝুকি কম থাকায় এসব পণ্যের ওপর কর তুলনামূলক কম। এ নিয়ে বিএটি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনীষা আব্রাহাম বলেন, “ধূমপানের বিকল্প পণ্যগুলো বিশ্বব্যাপী সহজলভ্য হচ্ছে; যে কারণে যেসব দেশে এ বিকল্প পণ্যগুলো পাওয়া যায় সেখানে সিগারেট বিক্রির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএটি মনে করে, প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের জন্য কম ঝুঁকির বিকল্প পণ্য ব্যবহার নিয়ে সময়োপযোগী নীতিমালা থাকা উচিত, যাতে তারা সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।আমরা বিশ্বাস করি, ভোক্তা সুরক্ষার জন্য উচ্চ মানসম্পন্ন প্যণের নিশ্চয়তা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এসব পণ্যের ব্যবহার প্রতিরোধ করা ও অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করা, এ তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে ধূমপানের ব্যাপকতার হার ৩২ শতাংশ। বিএটি বাংলাদেশ মনে করে, এ হার কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো যৌক্তিক বাস্তবধর্মী নীতিমালা প্রণয়ন এবং জনস্বাস্থ্য কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্ষতি হ্রাসকরণ কৌশল ও নীতি গ্রহণ করা।”বিএটি গ্রুপের চিফ করপোরেট অফিসার কিংসলে হুইটন বলেন, “যেসব প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান চালিয়ে যেতেন, তাদের জন্য ধূমপানের বিকল্প পণ্যে রূপান্তর করার সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রগতিশীল নীতিমালা প্রয়োজন, যা ধূমপানের হার এবং এর সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।উচ্চ মানসম্পন্ন ও নিরাপদ পণ্য নিশ্চিত করা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এসব পণ্যের ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা এবং নিয়মভঙ্গকারীদের জন্য কার্যকর শাস্তির ব্যবস্থার মাধ্যমেই এটি কার্যকর হওয়া সম্ভব।”বিএটি মনে করে, জনস্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে ‘টোব্যাকো হার্ম রিডাকশন’ কৌশল কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা অনুযায়ী এ কৌশল বাস্তবায়ন করা গেলে ধূমপান নিয়ন্ত্রণ এবং ঝুঁকিহ্রাস করার মাধ্যমে ধূমপানের হার হ্রাস করা সম্ভব।সকলের স্বার্থেই ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাসে একসাথে কাজ করতে হবে। উন্মুক্ত সংলাপ আয়োজন, বৈজ্ঞানিক গবেষণার তথ্য আদান-প্রদান এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ধূমপানের মত জাতীয়ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যার সমাধান সম্ভব।