আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তির জন্য মস্কোর ওপর চাপ বাড়াতে রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি- রসনেফট এবং লুকোয়েলের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে পরিকল্পিত বৈঠকটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের বিষয়ে ট্রাম্পের ঘোষণার একদিন পর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
“যতবার আমি ভ্লাদিমিরের সঙ্গে কথা বলি, ভালো আলোচনা হয়, কিন্তু তা কোথাও পৌঁছায় না। একদমই কোথাও না” নেটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে শান্তি আলোচনার বিষয়ে বৈঠকের পর এমন মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনেরও সমালোচনা করেন ট্রাম্প। যেখানে বলা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতি দিয়েছে। ট্রাম্প একে ‘মিথ্যা খবর’ বলে অভিহিত করেন।
এর আগে বুধবার ইউক্রেনে রাশিয়ার বোমাবর্ষণে শিশুসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, “এই অযৌক্তিক যুদ্ধ শেষ করতে পুতিনের অস্বীকৃতি” জানানোয় নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, এসব তেল কোম্পানি ক্রেমলিনের ‘যুদ্ধ যন্ত্রকে’ অর্থায়ন করে।
‘হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির এখনই সময়’ বিবৃতিতে বলেন বেসেন্ট।
বুধবার ওভাল অফিসে রুটের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তরিক নন। তিনি আশা করেন, নতুন নিষেধাজ্ঞা এই প্রক্রিয়ায় কোনো অগ্রগতি আনতে সাহায্য করবে।
‘আমার কেবল মনে হয়েছে, সময় এসেছে। আমরা অনেকদিন অপেক্ষা করেছি’ বলেন ট্রাম্প। তিনি নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজটিকে ‘অসাধারণ’ উল্লেখ করে বলেন, রাশিয়া যদি যুদ্ধ বন্ধে রাজি হয়, তবে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা যেতে পারে।
পদক্ষেপটির প্রশংসা করে রুটে বলেন, এটি ‘পুতিনের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করছে’। ‘চাপ দেওয়া প্রয়োজন, আর সেটিই আজ তিনি করেছেন’ মন্তব্য করেন রুটে।
এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শান্তি প্রস্তাবের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যগুলো এ সপ্তাহে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, আলোচনায় প্রধান সমস্যা হচ্ছে বর্তমান ফ্রন্টলাইনে লড়াই বন্ধ করতে মস্কোর অস্বীকৃতি।
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যও রসনেফট ও লুকোয়েলের ওপর একই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এই রাশিয়ান দুটি তেল কোম্পানি প্রতিদিন প্রায় ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন (৩১ লাখ) ব্যারেল তেল রপ্তানি করে। যুক্তরাজ্য সরকারের হিসাব অনুযায়ী, রসনেফট একাই রাশিয়ার মোট তেল উৎপাদনের প্রায় অর্ধেকের দায়িত্বে, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের ছয় শতাংশ।
তেল ও গ্যাস রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য এবং মস্কোর সবচেয়ে বড় ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত ও তুরস্ক। ক্রেমলিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে ট্রাম্প এই দেশগুলোকেও রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে "অত্যন্ত স্বাগত" জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available