নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: ময়মনসিংহ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক ‘শালবৃক্ষের মৃত্যু’। বন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবন, শালবনের অস্তিত্ব সংকট এবং শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বার্তা নিয়ে নির্মিত এই নাটক দর্শককে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।
সেলিনা হোসেনের ‘মৃত্যুর সূত্র কী’ ও মহেশ্বেতা দেবীর ‘শিকার’ গল্প অবলম্বনে নাটকের নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ মামুন রেজা। এতে অভিনয় করেছে থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রুদ্র সওজল কাব্য এবং সংস্কৃতিমনস্ক দর্শকরা। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন হয়। আজও একই সময়ে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
নাটকের কাহিনিতে চলেশ, মেরী ও চলেশের মায়ের মতো চরিত্রগুলোর মাধ্যমে ফুটে উঠেছে আদিবাসীদের সংগ্রাম ও বেঁচে থাকার ইতিহাস। পৈতৃক বনভূমি রক্ষায় নিরন্তর লড়াই করা চলেশ হয়ে ওঠে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয়ের প্রতীক। শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে তার মর্মান্তিক মৃত্যু আদিবাসীদের করুণ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে তরুণী মেরী বনভূমি ও সম্প্রদায়ের পবিত্রতা রক্ষায় অদম্য সাহসিকতার পরিচয় দেয়। নাটকে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে আদিবাসীদের গভীর সম্পর্ক, তাদের প্রাত্যহিক জীবন ও শিকার উৎসবের মতো সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গগুলো জীবন্তভাবে উঠে এসেছে।
চলেশ চরিত্রে অভিনয় করা মাহফুজুর রহমান বলেন, “শালবনকে এখানে কেবল গাছ হিসেবে নয়, বরং আদিবাসী সম্প্রদায়ের দীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতির ধারক এক জীবন্ত সত্তা হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর মৃত্যু মানে শুধু প্রকৃতির ক্ষতি নয়, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয় ও পূর্বপুরুষদের ইতিহাস হারিয়ে যাওয়া।”
নাটকের নির্দেশক সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ মামুন রেজা বলেন, “সারা পৃথিবীতেই আদিবাসী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শোষণ-অত্যাচারের শিকার হয়ে আসছে। আমাদের এ ভূখণ্ডেও দুর্বলের প্রতি সবলের আগ্রাসন ও নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে। এর প্রতিবাদেই আমরা এই নাটক মঞ্চে এনেছি। আমরা চাই না, কেউ শুধু নিজের জাতিগোষ্ঠী রক্ষার জন্য অন্যায়ভাবে শোষণ বা হত্যার শিকার হোক।”
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available