শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় অবৈধভাবে সারের মজুত ও পাচারের অভিযোগে ১৫ বস্তা সারসহ এক ভ্যানচালককে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে উপজেলার ভায়াডাংগা বাজার এলাকায় এ সার আটক করা হয়।


আটক ভ্যানচালক শফিক জানান, শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাংগা বাজারে অবস্থিত ‘মেঘনা অ্যান্ড বিনা ট্রেডার্স’-এর স্বত্বাধিকারী বিল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
তিনি জানান, বকশিগঞ্জ উপজেলার কামালপাট্টী গ্রামের মোশাররফ হোসেন তাকে ভায়াডাংগা বাজারে এসে বিল্লাল হোসেনের কাছ থেকে সার কিনতে পাঠান। পরে তিনি বিল্লাল হোসেনের কাছ থেকে মোট ২৩ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে ১৫ বস্তা সার ক্রয় করেন।
ভ্যানচালক আরও জানান, সার কেনাবেচার সময় প্রকাশ্যে নয়, আড়ালে গিয়ে বিল্লাল হোসেন তার কাছ থেকে টাকা নেন। ভ্যানে সার বস্তা তোলার পর দড়ি দিয়ে বাঁধতে চাইলে বিল্লাল হোসেন বাধা দিয়ে বলেন, বাজার এলাকায় বাঁধা যাবে না-দূরে অন্য কোথাও গিয়ে সার বাঁধতে হবে, তারপর ভায়াডাংগা বাজার পার হয়ে বাঘহাতা গ্রামে গেলে স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে এবং পরে সারসহ চালক আটক হয়।
ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনীষা আহম্মেদের পরামর্শক্রমে আটক সার বাঘহাতা গ্রামের ইউপি সদস্যের জিম্মায় সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হেলাল মিয়া, নাদের মিয়া ও মনি মুক্তা বলেন, সার সংকটের কারণে তারা সময় মতো ফসল চাষ করতে পারছেন না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী শ্রীবরদী উপজেলা থেকে পাশের বকশিগঞ্জ উপজেলায় সার পাচার করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। এতে প্রকৃত কৃষকেরা বিপাকে পড়ছেন। তারা অবিলম্বে সঠিক তদন্ত করে অবৈধ সার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি অফিসার হাকিম মিয়া সার পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। এ অভিযোগ নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে।
অভিযোগের বিষয়ে বিল্লাল হোসেন বলেন, সম্প্রতি আমাদের প্রতিষ্ঠান বিনা এন্ড মেঘনা ট্রেডার্স-এর বিরুদ্ধে যে অবৈধ সার ব্যবসার অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত নিয়ম-কানুন ও লাইসেন্স অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনীষা আহম্মেদ বলেন, অবৈধ সার মজুত ও পাচারের বিরুদ্ধে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। আটক বিষয়ের সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান আকন্দ বলেন, অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available