সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার আশুলিয়ায় শিক্ষার্থীকে পিকনিকের কথা বলে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের পর জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে বেসরকারি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি মৃদুল দেওয়ানের ভাইসহ ৪ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

৩ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান। এর আগে ২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।


গ্রেফতাররা হলেন- গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দেলোয়ার ভূইয়া, তাজুল ইসলাম তাজ, শ্রাবণ শাহা ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অন্তু দেওয়ান। অন্তু দেওয়ান গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ানের চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে পিকনিকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীকে আশুলিয়ার ফুলেরটেক এলাকায় নিয়ে যায়। পথিমধ্যে কোমল পানীয় 'মজোর' সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ালে কিছুক্ষণ পর অচেতন হয়ে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে জ্ঞান ফিরলে আসামিদের ফুলের টেকের ম্যাচে নিজেকে দেখেন ভুক্তভোগী এবং বুঝতে পারেন তার সাথে জোর পূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করা হয়েছে। পরে ভুক্তভোগী ডাকচিৎকার শুরু করলে আসামিরা ধারণকৃত ভিডিও এবং অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরাল করে দেওয়াসহ এসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয়। ঘটনার পর থেকে জিম্মি করে ধাপে ধাপে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোট ৯৬ হাজার টাকাও হাতিয়ে নেয় ধর্ষকরা।
ভুক্তভোগী জানান, গত ৪ নভেম্বর তাকে আবারও শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসামিরা। পরে গত ৬ নভেম্বর আসামি অন্তু দেওয়ানের নির্দেশনায় হুমকি ও অন্তু দেওয়ানের সাথে শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তাদের প্রস্তাবে রাজী না হলে ভুক্তভোগীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ এলোপাথারী চড় থাপ্পর দিয়ে টেনেহিঁচড়ে অন্তু দেওয়ানের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আবারও বোতলে থাকা বিষাক্ত নেশাজাতীয় পানীয় ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক খেতে বাধ্য করে। ঘটনার পর অসুস্থ অবস্থায় কোনমতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে গুরুত্বর অসুস্থ ও অচেতন হয়ে পড়েন। পরে সহপাঠী ও শিক্ষকরা গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেলে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে আসামিরা আরও চড়াও হন।
চিকিৎসা শেষে আবার গত ২৬ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের একাডেমিক কক্ষে গেলে আসামিরা সাথে সাথে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া লিখিত অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। পরে বিকেল ৩টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরে ২ ডিসেম্বর আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, এটা গত এপ্রিল মাসের ঘটনা। ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় ১৭ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available