ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রমত্তা পদ্মা নদীতে বৈধ ইজারা আদায়ে বাধাপ্রদান করতে গুলিবর্ষণ করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে নদীর তীরে বসবাসকারীদের মধ্যে ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
৬ অক্টোবর সোমবার বিকেল ৩টার সময় উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের ৫নং সাড়াঘাট এলাকার (সুইচগেট) ক্যানাল পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধরা হলেন, সাঁড়া ইউনিয়নের ৫নং সাড়াঘাট ক্যানাল পাড়া এলাকার হোসেন গজীর ছেলে মো. নিজাম (২৬) এবং বাবলু আলদারের ছেলে সজীব আলদার (২২)। আহতদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় পদ্মানদীর পাকশী ব্রীজ এরিয়া থেকে দুটি স্পিডবোট ভর্তি বন্দুক হাতে ১২ থেকে ১৪ জনের একটি দল ৫নং সাড়া ঘাটে ইজারা আদায়কারী অপর একটি স্পিডবোটকে উদ্দেশ্য করে গুলি করতে থাকে। এসময় ইজারা আদায়কারীরা প্রাণ বাঁচাতে নদী থেকে পালিয়ে গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করতে করতে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এসময় এলকার সাধারণ জনতার মধ্যে ওই দুজন গুলিবিদ্ধ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী রিনা খাতুন বলেন, বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সন্ত্রাসীদের সদস্যরা এলাকার মধ্যে ঢুকে পড়ে। এসময় স্থানীয় একটি দোকান বসে থাকা ওই ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
৫নং ঘাট ক্যানাল পাড়া এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী নূর ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি গোসল করছিলাম। এমন সময় আচমকা গুলির শব্দ শুনে উঁকি মেরে দেখি, ১২/১৪ জনের একটি সন্ত্রাসী দল বন্দুক হাতে আমাদের গ্রামের দিকে তাক করে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে। প্রায় ৩৫ রাউন্ড গুলি করার পর তারা ফিরে যায়। তবে ফিরে যাওয়ার সময় ঘাটে থাকা ১টি স্পিডবোড ও ১টি নৌকা তাদের বোটের সাথে বেঁধে নিয়ে গেছে।
আহতের বড় ভাই সুমন বলেন, এখানকার মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমরা ভালোমন্দ কিছুই জানি না। অথচ আমরাই গুলি খেলাম। আমরাই মরব!
জানতে চাইলে ঈশ্বরদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব ও ১৪৩২ সালের ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া রানা খরিয়া তরিয়া মহালের বৈধ ইজারাদার মেহেদী হাসান বলেন, বৈধ ইজারাদার হিসেবে আমার নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা ইজারা আদায় করছিলো ৫নং সাড়া ঘাট এলাকায়। এসময় কুষ্টিয়া জেলার “গ্রুপঅন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড”র সহকারী পরিচালক সোহেল খন্দকার তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার নিরস্ত্র লোকজনের উপর গুলি বর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় দুজন গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা যাওয়ার সময় ইজারা আদায়ের ৩৫ হাজার টাকা, আমার স্পিডবোডসহ আরেকটি নৌকা নিয়ে গেছে।
জানতে চাইলে লক্ষীকুন্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শফিকুল এসলাম বলেন, আমি ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরেছি প্রায় দেড় ঘণ্টা পর। তারপর ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে আমার খানিকটা দেরী হয়েছে। আমি এখনো ঘটনা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। শুধু শুনেছি, মেহেদী হাসানের স্পিডবোড নাকি নিয়ে গেছে সন্ত্রসীরা।
জানতে চাইলে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আ স ম আব্দুন নুর বলেন, নদীতে গুলিবর্ষণের ঘটনা দেখার দ্বায়িত্ব মূলত নৌ পুলিশের। তবে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শুনেছি দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় অভিযোগ করতে বলেছি। অভিযোগ পেলে নৌ পুলিশ দিয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available