পাবনা প্রতিনিধি: দিনদুপুরে পাবনার মধ্য শহরে এক যুবককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। ৬ আগস্ট বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের চারতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
অপহরণ করে প্রথমে ওই যুবকের কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে বিকাশ ও ব্যাংকের এটিএম কার্ডের মাধ্যমে মোট ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। ঘটনার পরই পাবনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন ওই যুবক।
ভুক্তভোগী সোলায়মান হোসেন শুভ পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের চর আশুতোষপুর গ্রামের সালাম মোল্লার ছেলে। তিনি পেশায় ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী।
এজাহারে বলা হয়েছে, ব্যবসায়িক কেনাকাটার কাজে শহরের টাউন হল থেকে পাবনা সেবা হাসপাতাল হয়ে চারতলা মোড়ের হার্ডওয়্যারের দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা হন সোলায়মান। পথে চারতলা মোড়ে পৌঁছালে ৩-৪ যুবক তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরপর ফিরে তাকাতেই রাস্তার পাশ থেকে চাকু ঠেকিয়ে তাকে অপহরণ করে পরিত্যক্ত চারতলা ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে মারধর করে তার কাছে থাকা মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এরপর মানিব্যাগে থাকা ৫ হাজার ৬০০ টাকা ও তার বিকাশে থাকা ২১৫ টাকা নেয়।
পরে লোহার হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও লাঠি দিয়ে মারধর করে বন্ধুর থেকে বিকাশে ৫ হাজার টাকা নিতে বাধ্য করে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে আবারও ১০ হাজার টাকা বিকাশে আনতে বললে তা পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় মারধর করা হয়। পরে মানিব্যাগে থাকা ব্যাংকের এটিএম কার্ডের পিনকোড বলতে রাজি না হলে সোলায়মানের গলায় চাকু ও মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পিনকোড বলতে বাধ্য করে। এরপর কার্ড থেকে চার দফায় দুর্বৃত্তরা ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয়। পরে তাকে উলঙ্গ করে ওই এলাকায় অশ্লীল কাজে এসেছিলেন মর্মে একটি স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করে ভিডিও করা হয়। পরে কোথাও অভিযোগ দিলে তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীর বন্ধু রেজা বলেন, দুপুরে হঠাৎ ফোন দিয়ে টাকা চান সোলায়মান। দ্রুত টাকা পাঠাতে বাধ্য করতে তাকে মারধর ও গালিগালাজ করতে শোনা যায় ফোনে। এসময় দ্রুত ৫ হাজার টাকা পাঠালে আবার আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এ টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তার সঙ্গে বাকি ঘটনা ঘটে। এর মাঝে পুলিশকে জানালে তারা লোকেশন ট্রাক করে সোলায়মানকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে উদ্ধারের আগেই তার থেকে সব নিয়ে ছেড়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী সোলায়মান বলেন, দফায় দফায় মারধর ও টাকা নেওয়ার পর আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ানো হয়েছে। এটি নিয়ে আমি আতঙ্কে আছি।
তিনি বলেন, এই টাকাগুলো ছাড়া আমার তেমন কোনো সম্বল নেই। এখন আমি কীভাবে লেবারদের বিল দেবো, কীভাবে চলবো। আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। এরই মধ্যে পুলিশ এটি নিয়ে কাজ করছে। দ্রুতই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available