নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেনী জেলায় সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি, বাঁধ সুরক্ষা ও আন্ত:দেশীয় পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ‘ফেনী নাগরিক কোয়ালিশন’র পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এসময় ফেনী নাগরিক কোয়ালিশন এর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট সিজিডি এর নির্বাহী পরিচালক সাইদুল ইসলাম, গ্লোবাল নলেজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ ওমর ফারুক এবং সমাজকর্মী রাউফু রাসুলুন জ্যোতি।
স্মারকলিপিতে ফেনীকে কৌশলগত অঞ্চল ঘোষণা করে বন্যা পরিস্থিতি, বাঁধ নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ইস্যুতে অতিদ্রুত নিম্নোক্ত ১১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয়:
১. জাতীয় ও স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের মাধ্যমে ফেনীর জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরবিচ্ছিন্ন বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থা চালু করা হোক।
২. ভারত থেকে পানি ছাড়ার সম্ভাবনা থাকলে তা অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগেই বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করার জন্য কূটনৈতিক চ্যানেলে চুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
৩. ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিউনিটি ফ্লাড রেসপন্স টিম (CFRT) গঠন করে জনগণকে সচেতন করা ও প্রস্তুত রাখা হোক।
৪. স্মার্ট অ্যালার্টিং সিস্টেম চালু করে মোবাইল ও লাউডস্পিকারের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণকে সময়মতো সতর্ক করা হোক।
৫. ফেনী নদীসহ যে সব স্থানে নদীভাঙন বা পানি প্রবাহ বেশি, সেখানে টেকসই ও উচ্চমানসম্পন্ন স্থায়ী বাঁধ (Climate-Resilient Embankments) নির্মাণ করতে হবে।
৬. বাঁধের অবকাঠামোতে গবেষণাভিত্তিক ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধান প্রয়োগ করতে হবে, যাতে একটানা ভারী বর্ষণে কিংবা ভারত থেকে হঠাৎ পানি ছাড়লে সেগুলো ভেঙে না পড়ে।
৭. বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থায়ী বাঁধ পর্যবেক্ষণ টাস্কফোর্স গঠন করা হোক, যেখানে প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি থাকবেন।
৮. ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আলোকে ফেনী ও ত্রিপুরা সীমান্তে যৌথ পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হোক। প্রতিবছর বর্ষাকাল শুরু হওয়ার আগে ত্রিপুরা রাজ্যের প্রশাসন ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে পূর্ব আলোচনা ও সময়সূচি নির্ধারণ করা হোক, কখন কোন গেট খোলা হবে, কত পানি ছাড়া হবে।
৯. নেদারল্যান্ডস ও জাপানের মত উন্নত দেশগুলো বন্যা ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বনন্দিত। তাদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ফেনী নদীর জন্য “Integrated Water Management Master Plan” তৈরি করা হোক।
১০. ড্রোন, সেন্সর ও স্যাটেলাইট ম্যাপিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে নদী ও বাঁধের উপর নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।
১১. স্কুল-কলেজে বন্যা-প্রস্তুতি বিষয়ক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হোক, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী দল ও ফায়ার সার্ভিসকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি রাখা হোক।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available